পরজন্ম তোর নৃত্যমুখর হোক্ সোনা
মঞ্জুশ্রী রায়চৌধুরী
দেবাশীষ সেনশর্মা
17ই জুলাই 2014
কি যে লিখি... দেবাশীষ সেনশর্মা। আমার প্রিয়তম এই ছাত্রটি কাল অনন্তে মিলিয়েছে নিশ্বাস।
গুণের আকর তোর গল্পের মত ছিল জীবন। সবটার হিসেব বুঝলি না বলেই গেলি অবেলায়। আত্মীয় বিহীন (নিজ দোষে), বন্ধু বিহীন (নিজ দোষে), ছাত্র বিহীন (নিজ দোষে), গুরু বিহীন (নিজ দোষে), আশ্রয় বিহীন (নিজ দোষে) কিভাবে কাটালি কাল- আহা...
ভগবানের মার দুনিয়ার বার যে বলে, তুই তার সেরা স্যাম্পল।স্কিত্জোফ্রেনিয়ার প্রকোপে পাগল কুকুরের মত দৌড়ে বেড়ালি। ভালবাসার জনকে দূরে ঠেললি, ভুল লোককে বিশ্বাসে নিলি। অবশেষে? না পেলি সহানুভূতি না মায়া না করুণা কারুর। হায়, কে দায় নেবে রে তোর যদি অবাধ্য হোস? অবাধ্যতার এ’ দায় ব্যক্তি তোরও নয় দেবাশীষ জানি আমি, জানে সবাই। রোগ তোকে নিয়ে গেছে ভোগে।
কি পাপ, কি পাপ। অপূর্ণ মানুষটাকে ঈশ্বর পূর্ণ মানুষের ভান দিয়েছেন এমন, যে সে নিজেই নিজের সূতো ছিঁড়ছে এ কথাটা বুঝলোই না। এই নিয়তিই সাজানো ছিল রে... গুণ তোকে তাড়িত করবে আর অপারক তুই ভেঙে পড়বি যত্রতত্র।
ঈশ্বরের সেরা খেলার পুতুল ছিলি তুই। নাহলে একদিকে এত গুণের সমাহার আর অন্যদিকে বিভ্রান্তি? মরে বেঁচেছিস দেবাশীষ, মরে বেঁচেছিস। ফ্রেশ জন্ম নিয়ে আবার ঘুরে আয় গুণনিধি আমার।
তোর উদ্ভাস তোকেই পোড়াবে, এ জন্মের এমনই ছিল ভবিতব্য, মেনে তো নিতেই হোল শেষে। তাই না? নতুন জন্মে অসুস্থতা মুছে সুস্থ ঘরে আয়... কিই বা চাইতে পারি এ’ছাড়া।
কাল বুধবার, আমার কাছে ক্লাশ করতে আসা ছিল যে সময়, তখনই তুই ফুড়ুত হলি... সকাল দশটা।
বড় গুরুর কাছে বড়র টানে বড় খেলা খেলতে চলে গেলি। এবার মাঠ সাফা করে আসিস দেবাশীষ... সব জঞ্জাল ছেঁটে। এ জন্মের লেফ্ট ওভার শেষ করিস আগামীতে। শান্তি, শান্তি, শান্তি। পরজন্ম তোর নৃত্যমুখর হোক্ সোনা।