Friday, 26 April 2013

আমার নতুন বন্ধু: 'ভুচুকুলু ও চার রূপসী'

মঞ্জুশ্রী রায়চৌধুরী


                                     ভুচুকুলু ও চার রূপসী

প্রাণ পাচ্ছি আবার... বাঁচছি নতুন করে জীবনের অন্য মানে খুঁজে নিয়ে অন্য নতুন বোধেই ‘ভুচুকুলু ও চার রূপসী’কে আমার বন্ধু বলে যেই মেনে নিয়েছি, সেই বদলে গেছে অন্তরমহল যেন পাহাড়ি ঝোরায় নাইতে নেমেছি মাড়িয়ে আসা সময়ের যত গ্লানি আর ঘষটানো যাপনের ক্লান্ত দিন-মন-বাঁচাকে রিচার্জ করে চলেছি- তারপর থেকেইএরা কুঁড়ির থেকে সবে মুক্ত হাওয়ায় পাপড়ি মেলছে, নিষ্পাপ মন থেকে উড়ছে চন্দনগন্ধ... আমি কেন না সামিল হই তা’তে? আফটার অল আমিও তো ফুল, আমিও তো সুবাতাস... খালি ‘কাল’এর ময়লা মন থেকে মুছেটুছে ফেলে আমায় জাগতে হবে চন্দনবনে সে চেষ্টাতেই ছিলাম, হঠাত্  পেয়ে গেলাম এদের। ব্যস, আর কে পায় আমায়, ভোরের ফুলগুলোকেই বানিয়ে নিয়েছি  জিয়নকাঠি, আমার রাত্রিদিনের অপেক্ষা।

অভিজ্ঞতা মানেই পোকায় কাটা গন্ধদিনের ভান্ডার (নিজের অনুভবে), জ্ঞানের আড়ম্বর মানেই পাশ থেকে প্রজাপতিদের উড়ে যাওয়া (আমার আপন বোধে) অথচ কচিকাঁচাগুলো একদম আনপ্রেডিক্টেবল রঙমশাল... কখন ফাটবে বা রঙ ছড়াবে জানা নেই। ভুলভ্রান্তির মধ্যে দিয়ে যাওয়া ওরা একথোকা সারল্য। আমি সরলতায় যেতে চাই। ওরা হিসেবহীনের মাঠ, ছুঁতে চায় দিগন্ত- আমিও হাত ধরে সেই অবধি ছুটতে চাই ভুলে যেতে চাই  যুক্তি-বুদ্ধি-কার্যকারণ। মনে-মনে আমি স্কুল জীবনে ছিলামই... এখন বাস্তবিক বন্ধু জুটিয়ে ক্লাশে ঢুকছি।  

কিছুদিন ধরে মনে হচ্ছিল-  কি চাই যেন আমরা? কার কাছে চাই? চাই আসলে অস্তিত্ত্বের স্বীকৃতি-  স্বত্ত্বার প্রতি অন্যের মনোযোগ। কিন্তু পাই কি?  ঠোক্কর খেতে-খেতে যদি নির্লিপ্তির মধ্যে ঢুকে পড়ি কখনো, তখন হঠাত্ দেখি হাত ফাঁকা... শূন্যতর বোধে পৌঁছৈ গেছি অখেয়ালেসে’সব ঝেড়েঝুড়ে ফের যখন ভেসে উঠতে চাই, একাকীত্বের ব্যথা মুছে ‘পূর্ণ আছি’–র মায়ায় যেতে চাই- তখনই বন্ধু খুঁজি, ফেসবুকে আসি, উগড়ে দিই কিছু তাত্ক্ষণিক হিসেব-নিকেশ, এলো-কথার পাঁচালী। যাঁরা ছবি টাঙিয়ে, কেজো কথার ফুলঝুরি উড়িয়ে ‘সমুখে শান্তি পারাবার’ দেখতে পান, তাঁরা তবু যেমন-তেমন অবস্থা করুণ তাঁদেরই, যাঁরা কবিতা লেখেন, আঁকেন, দর্শনতত্ত্বে  আনন্দ পাননিজেকে গল্পকার, কবি বা দার্শনিক ভাবা সেই তাঁরা আদ্যান্ত সাজানো একটা রূপকথার সঙ্গে  বসত করেন- অজান্তেই সৃজনধর্মী কাজ পোস্ট হওয়া মাত্রই যখন অমনোযোগীতার প্রতিযোগীতায় নাম লিখিয়ে ক্রমাগত নীচে নামে... নেমেই চলে, তখন কবির স্বপ্ন ফুরোয়, বাকীদের বোকা ভেবে করুণা করেন (আড়ালে নিজেকেই!)। আরেকদল আছেন, দুর্দান্ত... যাঁরা Promotion-এর কারণে Socialite করেন। পত্রিকায় লেখা বেরলে, সদনে প্রোগ্রাম হলে, এ্যাকাডেমীতে নাটক, চ্যানেলে ইন্টারভিউ...

কিন্তু খুশী একসময় এখানেও ফুরোয়, ক্লান্তি আসে। ‘অকারণের আনন্দ’ বলে একটা আনন্দ আছে, যা কার্যকারণ ভুলে শুধু তৃপ্তিবোধে নেয়, যা দেয় এই ‘ভুচুকুলু ও চার রূপসী’-র মত ছুটকোগুলো। এই রোদ্দুর, এই ঘাসফুল আমায় শান্তি দিয়েছে, জানি আরো দেবে... যদি ভুলে যেতে পারি আমারই কাছে বানিয়ে রাখা আমার ফানুস অবস্থান। 



1 comment:

riddhyg said...

Darun hoyeche mummum