Saturday 9 July 2011

মানুষ বনসাই

















বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে - গাছেরাও প্রকৃতিতেই সুন্দর, অপ্রাকৃতিক অবস্থায় নয়। গাছেদের এইরকম অপ্রাকৃতিক অবস্থার পরিণতিই বোধহয় বনসাই নামে অভিহিত।
বনসাই এর অর্থ “এ ট্রি ইন এ পট” অর্থাৎ পটের গাছ, পটের বিবিরই মত, যা শুধু সৌন্দর্য বর্ধন করে। বনসাইকে গাছ বললে হয়তো একটু ভুল বলা হয়, বনসাই এর মধ্যে গাছের সৌন্দর্য থাকলেও গাছের উপকারিতা তেমন নেই, নেহাৎ ঘর সাজানো ছাড়া। দোষটা বনসাই এর নয়, পুরো কৃতিত্বটাই তাঁর যিনি বনসাই বানিয়েছেন। বনসাই গাছে ডালপালা থাকে, ফুলফলও থাকে তবুও অনেক কিছুই যেন নেই - নিজের খেয়াল খুশিতে বেড়ে ওঠা নেই, ফুলফলের বাড়বাড়ন্ত নেই, স্নিগ্ধ ছায়া নেই, সর্বাপরি - বিনাশ হওয়ার পরও অবিনাশ হয়ে বেঁচে থাকার কোন সুযোগই নেই।
আজকাল মানুষও বনসাই হয়ে যাচ্ছে বা যেতে বসেছে। দৈহিক বাড়বাড়ন্ত হলেও মনের দিক থেকে আমরা বনসাই হয়েই রয়ে যাই। শিক্ষা-দীক্ষা, প্রেম-ভালবাসা, মায়া-মমতা সবই আছে, কিন্তু বনসাই গাছের শোভাবর্ধনকারি দু-একটি ফলফুলেরই মতো - হাতে গোনা, নিক্তিতে মাপা।
গাছ বেড়ে উঠে প্রকিতির নিয়মে, প্রয়োজন বলতে শুধূ একটু মাটি, সঙ্গে সামান্য জল-হাওয়া-বাতাস - সবই প্রকৃতি থেকেই পাওয়া। তবে বেড়ে ওঠার জন্য ‘মাটি’ ছাড়াও যে ‘মা’ এবং ‘মানুষ’এর সাহায্য এবং সহানুভূতির প্রয়োজন সেটা মমতাদিদি বুঝলেও গাছেদের হয়তো জানা নেই, বা জেনেও করার তেমন কিছুই নেই, কারন ওরা মানুষের মতো প্রতিবাদ করতে পারে না। তাই গাছেরা আমাদের এত কিছু দেওয়ার পরও মানুষ তাদের উপর নির্যাতন করে, এমনকি কেটে ফেলতেও কসুর করে না। যদি মানুষের অগনিত হত্যাকান্ডের মূল কারণ নিয়ে কখনো বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে হয়তো দেখা যাবে বেশির ভাগ হত্যার পেছনে থাকে আক্রোশ কিম্বা প্রতিহিংসা, অথচ মজার ব্যপার গাছেদেরকে হত্যা করার পেছনে কিন্তু পুরোটাই লোভ - আক্রোশ কিম্বা প্রতিহিংসার কোন অবকাশই নেই।
আর এই বনসাই করণ - গাছেদের নির্যাতনেরই আর এক নামান্তার, জোর করে পঙ্গু করে দেওয়ারই সামিল। গাছের শাখাপ্রশাখাকে তারের বেড়ী দিয়ে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখে তার ডালপালাকে ছেঁটে ফেলে তার বাড়বাড়ন্তকে জোর করে আটকে রেখে বামন বানিয়ে ঘর সাজানোর সামগ্রী করে তোলা। এ যেন সেই তথাকথিত অসাধু ছেলেধরার বাচ্চাদেরকে হাঁড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে বিকলাঙ্গ করে ভিক্ষে করানোর মতই ব্যবসায়িক অভিপ্রায়। যে গাছ একদিন বড় হয়ে অনেক মানুষের ফলফুলের যোগান দিত পারতো, কিম্বা ক্লান্ত মানুষের কাছে স্নিগ্ধ ছায়া হয়ে দাঁড়াতে পারতো। সে গাছকেই বনসাই হয়ে মাত্র একটি পরিবারের সৌন্দর্য সামগ্রী হয়ে রয়ে যেতে হয়।
মানুষের জীবনও প্রকিতির নিয়ম মেনেই চলে, নিজের খেয়াল খুশিতে বেড়ে উঠতে চায়। দয়া-মায়া, প্রেম-ভালবাসা, সততা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ সবই যেন জীবনের এক-একটি শাখাপ্রশাখা, সময়ের সাথে সাথে তা বিকশিত হতে চায়। কিন্তু আমরা তাকে বেঁধে ফেলে, ছেঁটে ফেলে বনসাই বানিয়ে ফেলি বা ফেলতে চাই। আমরা সবকিছু যে জেনেবুঝে করি, তা নয় - অনেক সময় আমাদের আচার ব্যবহার শিশুর মানসিক বিকাশের ডালপালাকে অজান্তেই ছেঁটে ফেলে, যা আমরা টেরও পাই না।
এই প্রসঙ্গে একটা গল্প মনে পড়ে গেল,
একটি বাচ্চা স্কুল থেকে তার সহপাঠির পেন্সিল, রাবার চুরি করে নিয়ে আসার পর বাড়িতে জানাজানি হাওয়ায় মা খুব বকাবকি করেন। মায়ের ঐ তিরস্কারই হয়তো ভবিষ্যতে শিশুটির সততার ডালপালাকে মেলে ধরতে সাহায্য করতো। কিন্তু তারপর মা যখন চেঁচিয়ে বলে উঠেন, দিনদিন তোমার স্বভাবটা খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, সব কিছুই বেশি বেশি চাই - আমি অফিস থেকে এত পেন্সিল, রাবার এনে দি তাতেও তোমার মন ভারে না। তখন মায়ের ঐ কথাটাই শিশুটির সততার ডালপালাকে মনের আজান্তেই ছেঁটে ফেলে তার বনসাই করণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
এই রকম উদাহরণ ভুরিভুরি,
ছেলে নিয়ম মেনে টিকিটের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে আর বাবা বলছেন কি এতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছিস দশটা টাকা দিয়ে পাশ থেকে কেটে নে। সত্যি এই না হলে পিতা - পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, কত সহজে মূল্যবোধের ডালপালাটাকে কেটে ফেলা হোল।
পাশের বাড়ির সহপাঠি স্কুলের হোম-ওর্য়াক এর ব্যাপারে জানতে এসেছে, ছেলে খোলা মনে বন্ধুকে সব বলে দেয়, পারে মা বকাবকি করেন, তোর সব কিছু বলার কি দরকার ছিল, ও সব জেনে নিলে তুই আর ফাস্ট হতে পারবি না। এবার বন্ধুত্বের গজিয়ে ওঠা ডালপালাগুলোকে একটু ছেঁটে দেওয়া হোল।
এই যে বিভিন্ন জনসভার নানান মঞ্চে পুরুষরা নারী স্বাধীনতার জন্য গলা ফাটিয়ে লেকচার দিয়ে বেড়ায় আর বাড়ি ফিরে বউকে বলে আমার কথাই শেষ কথা, না পোষায় চলে যাও। কারন সেই একই, মুখে যাই বলি না কেন, আসলে কিন্তু মন থেকে চাই নারী স্বাধীনতার শাখাপ্রশাখাকে ছেঁটে ফেলে তাকে বনসাই বানিয়ে ঘরের মধ্যে সাজিয়ে রাখতে।
এবার প্রেম-ভালবাসার কথায় আসি -মানুষের জীবনে প্রেম-ভালবাসা অনেকটা ফুলফলেরই মত পরিপূর্ণতার এক অমোঘ নিদর্শন। পরিনত বৃক্ষ যেমন অগণিত ফুলেফলে সেজে উঠতে চায়, ঠিক সেইভাবে আমাদের জীবনও অফুরন্ত প্রেম-ভালবাসায় ভরে উঠতে চায়, কিন্তু আমরা যে বনসাই হয়ে থাকতে চাই। প্রেম-ভালবাসা সবই থাকবে কিন্তু তা শুধু শোভাবর্ধনের নিমিত্তে,দু-একটি ফুলফলে সুসজ্জিত হয়ে, তাই তার বাড়বাড়ন্তকে বেঁধে রাখতেই হবে, প্রেমের জোয়ারে ভেসে যেয়ে তাকে কোন মতেই বিকশিত হতে দেওয়া চলবে না, যা শুধূ ভ্যলেন্টাইনস ডে কিম্বা ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপনের মাধ্যমেই বেঁচে থাকবে।
আগে একটা কথা ছিল “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহু দূর” – এখন মানুষ মেলাতে চায় না, বরং তর্ক জিইয়ে রাখতে চায়, তাই অগাধ বিশ্বাসের কোন প্রয়োজন নেই, বনসাইয়ের মত শো-পিস হিসাবে একটু-আধটু থাকলেই চলবে।
পরিশেষে দয়া-মায়া, মানবিকতার প্রসঙ্গে আসি -
স্কুল থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় আহত পথচারীকে রাস্তা থেকে তুলে হাসপাতালে পৌঁছে বাড়ি ফিরতে ছেলের দেরী হাওয়ায় মা-বাবা যখন বকাবকি করে বলেন -তোমার এত দরদ দেখিয়ে মাতব্বারি করার কি দরকার ছিল। তখন ছেলেটির সদ্য গজিয়ে ওঠা মানবিকতার কচিপাতাগুলো মনের অজান্তেই খোসে পড়ে। দেশের বর্তমান হিংসাত্মক কা্র্য্যকলাপ শিশু মনে দয়া-মায়ার কোমল ডালপালাগুলকে নষ্ট করে নিষ্ঠুর বানিয়ে দেয়। তাইতো এখন সরষের তেল ছাড়া আমাদের চোখে আর জলই আসে না, তাও আবার বিজ্ঞাপনের মত খাঁটি হওয়া চাই।
একান্নবর্তী পরিবার, পুরনো সংস্কৃতি ও সামাজিক ঐতিহ্য মানুষকে বেঁধে রাখতে চায়, তাই সেই মূল শেকড়গুলিকে সযত্নে ছেঁটে ফেলে মানুষকে আত্মকেন্দ্রিক বানানো খুবই জরুরী, এটাও বনসাই করণ প্রক্রিয়ার অন্যতম অঙ্গবিশেষ। যাতে করে সে শুধুমাত্র একটি পরিবারের সৌন্দর্য সামগ্রী হয়ে বিরাজ করতে পারে। এইভাবেই জীবনের প্রতি পদক্ষেপে সততা, মানবিকতা, মূল্যবোধ, মায়া-মমতা, প্রেম-ভালোবাসা, বিশ্বাসের সবরকম শাখাপ্রশাখা ও ডালপালাগুলো ছাঁটা পড়তে পড়তে মানুষ একদিন বনসাইএ রুপান্তরিত হয়,আর তারই রূপে মুগ্ধ হয়ে আমাদের আত্মীয়স্বজন,বন্ধুবান্ধব তাকে সংসারের বৈঠকখানায় বনসাই এর মতো সাজিয়ে রেখে বিকিকিনির আসর বসায়।
কথায় আছে “অতি বড় হোয় নাকো ঝড়ে পড়ে যাবে”,সেইজন্য আজ আর কেউ বড় মানুষ হতে চায় না। আবার ছোট হয়ে থাকার ঝামেলাও আনেক, ছাগলে মুড়িয়ে খাবার সম্ভাবনা থাকে, তাই বনসাই হয়ে চার দেওয়ালের মধ্যে সুরক্ষিত থাকাই শ্রেয়। আধুনিক জীবনযাত্রার এই ইঁদুরদৌড়ে আমরা সবাই বনসাই মানুষ হওয়ার লক্ষ্যে সাঁই-সাঁই করে ছুটে চলেছি, মনের সায় থাক বা না থাক। তাই মাঝে মাঝেই সেই আত্মগ্লানি আমাদেরকে তাড়িয়ে বেরায়, তখন মঞ্জুশ্রী রায়চৌধুরীর কবিতার কথায় কথা মিলিয়ে বলতে ইচ্ছে করে...
আমি বটগাছ আজ
আমি ছড়িয়েছি ডালপালা।
কিন্তু ছায়া কই,
আমি ছাতা হতেও পারিনি গো।
সোনালী কারুকাজের সেন্টার টেবিলে
একবুক যত্ন-জনের ঘরের
শোভা হতে গিয়ে
আমি বনসাই হয়ে গেছি বাবা।

11 comments:

Aloke Bhanja said...

মঞ্জুশ্রী,
লেখাটা আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম, কিন্তু তোমার কবিতার ঐ “বনসাই” কথাটা মনে গেঁথে ছিল তাই আবার চেষ্টা করলাম তাকে ধরতে...কতটা পেরেছি সেটা পাঠাকরা বলতে পারবেন।

Unknown said...

দাদা, আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি আপনার লেখা পড়ে। এত ঠিক কথা, এত স্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ, তার চেয়েও বড়- অন্তে আমারই কবিতাকে এমনি করে তুলে ধরা.... যে মনোভাব আজকাল প্রায় দুর্লভ। আমার কবিতা নয় দাদা, আপনার ভিতরে কষ্টকথা ছিলই এ কবিতা শুধু তার সহায়ক। এটা ঠিকই যে, প্রকৃতির নিজস্বতাকে ছিঁড়েখুঁড়ে এ' এক অপ্রাকৃতিক বিনোদন। আপনার এই সহানুভবী ও সচেতনী লেখাটিকে কোন পত্রিকায় পাঠিয়ে দিন.... এ'কথা জানার প্রয়োজন মনে হয় সবার... দু'পাঁচজনের জন্য নয়।

পরবর্তীতে এমনি আরো কিছু লেখার অপেক্ষা নিয়ে শেষ করলাম।

তবে পটে যে বনসাই গাছ, তাকে একটু সুন্দর দেখতে হলে ভাল লাগত। কারণ অসৌন্দর্য্যের জন্য তার কোনো দায় নেই... সে আপ্রাণ সুন্দর হতে চায়।

তিতাস বেরা said...

অলোকবাবুর লেখাটি আমার পড়ে একটু ক্লিশে লাগল। ক্লিশে এই কারণে যে এই ধরণের কথাগুলো আমরা প্রায়ই শুনি। সেই হিসেবে কিছু নতুন নয়। কিছু কথা মনে হল সেগুলো বলি। যেমন, যে যে উদাহরণ উনি দিয়েছেন সেগুলো কোনো অর্থেই খুব আলাদা কিছু নয়। সমাজের পরিচিত দৃশ্য। যেহেতু মানুষ সমাজের ক্রীড়নক,সর্বস্তরের সামাজিক অবক্ষয়বোধ থেকেই এই ঘটনা গুলির জন্ম নেয়। সেক্ষেত্রে আলাদা করে কোন কিছুকে অপ্রাকৃতিক বা বনসাই মনে হতে যাবে কেন? এমন তো নয় যে, আমাদের সমাজব্যবস্থার বর্তমান রূপ একেবারে উদার,মহৎ ইত্যাদি ইত্যাদি। যেখানে সমাজটাই অবক্ষয়িত,সেখানে আসলে অস্বাভাবিক কিছু ঘটনা আসলে স্বাভাবিকের পর্যায়ে পড়ে। ভেবে দেখুন, সবকিছুই যদি বনসাই বা ক্ষুদ্র হয়ে যায় তাহলে আপাত ভাবে বিসদৃশতা কি চোখে পড়বে? 'অন্ধদের দেশে' সবাই তো খুশি ছিল।

আর একটা কথা মনে হল,সমাজ সর্বদাই পরিবর্তনশীল। প্রতিটি সমাজ ব্যবস্থার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য যুগান্তরের পরে ফুটে ওঠে। বর্তমান কালে, আগেকার গোষ্ঠীভিত্তিক সমাজ থেকে এককেন্দ্রীক সমাজে রূপান্তর পর্ব চলছে। এ পরিবর্তন স্বাভাবিক। এর সুফল ও কুফল বিবেচনার মতো স্তর এখনো আসেনি,কারণ রূপান্তর পর্ব এখনো চলছে। তাই হাহুতাশ করার কিছু নেই। কোন সমাজ ব্যবস্থা মানুষের সামগ্রিক স্বার্থের পরিপন্থী হলে তা আপনা থেকেই মুছে যাবে।

মূল্যবোধ ইত্যাদি বহুল প্রচলিত আপেক্ষিক অর্থবিশিষ্ট শব্দগুলোকে কেন যে চিরকালীন হিসেবে ধরা হচ্ছে,এটাও একটা ধাঁধা। এগুলোর সংজ্ঞা সামাজিক পরিস্থিতির স্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং সেই হিসেবে এই নিয়ে আক্ষেপ করার কিছু নেই।

সবশেষে,'মমতাদিদি'ছাড়াও পৃথিবীতে অন্তত ৪০০ কোটি লোক গাছেদের মর্ম বোঝে।
অলোকবাবু যদি ওঁর 'মাহাত্ম্যে' বিমোহিত হয়ে থাকেন,আপত্তির কিছু নেই,তবে 'ম'এর অনুপ্রাস রাজনীতি থেকে সাহিত্যের প্রবেশ করলে তা বড় চিন্তার বিষয়।

nilakash said...

তিতাস- সমাজ পরিবর্তনশীল ঠিক কথা, তাই বলে মূল্যবোধ, সততা, স্নেহ এ ধরণের কিছু গুণাবলীও তার সঙ্গে রূপান্তরিত হলে সেই সমাজ কি বসবাসযোগ্য হবে? এগুলো আপেক্ষিক অর্থবিশিষ্ট হলেও, কি করে এগুলোর প্রতি আস্থা রাখা যায় যেই শিক্ষাটা অন্তঃত দেওয়া উচিত্। একটা বটগাছ পরিস্থিতির চাপে তেঁতুল গাছে বদলে না গেলে একজন মানুষ কেন সামাজিক পরিস্থিতির চাপে অসত্ হবে? তার মানে তার তৈরী হয়ে ওঠায় কোন গন্ডোগোল আছে। আমি বলতে চাই সেইটা নজর দেওয়া উচিত।
অলোক ভঞ্জর লেখাটা আমার বেশ ভালই লেগেছে।

তিতাস বেরা said...

১। নীলাকাশ বাবু,আপনি ডিম আগে না মুরগি আগে গুলিয়েছেন। আমি বলতে চেয়েছি,মূল্যবোধ সততা স্নেহ ইত্যাদি শব্দের কোন চিরকালীন সংজ্ঞা হয় না। আবেগ বশতঃ সেই সংজ্ঞা নির্ধারণ করা যেতেই পারে,কিন্তু লজিক্যালি সম্ভব নয়। মানুষ পরিবর্তনের সাথে সাথে সমস্ত কিছুর নতুন করে মূল্যায়ন করে। সেই হিসেবে নতুন ভাবে সমাজ সংজ্ঞায়িত হয় এবং ফলশ্রুতি হিসেবে বসবাসযোগ্য অবশ্যই থাকে। এই 'বসবাসযোগ্যতার' মাপকাঠি সেই নতুন ডেফিনিশন দিয়ে নির্ধারিত হবে। বর্তমান রীতি অনুযায়ী নয়।

২। নানা মানবিক গুণাবলীর প্রতি অনাস্থা রাখার কথা তো লিখিনি।

৩। ফের চর্বিতচর্বণ করতে ভালো লাগছে না তবুও বলি,প্রথমে বলেছি যে যেখানে সমাজ অবক্ষয়িত সেখানে অসামঞ্জস্য দেখে অবাক লাগার কিছু নেই। তারপর বলেছি গোষ্টীতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা থেকে বদলে গিয়ে ব্যাক্তিকেন্দ্রিক সমাজ ব্যবস্থা তৈরী হওয়ার সুফল ও কুফল এখনই বিচারযোগ্য নয়।

৪। অলোকবাবু তাঁর লেখায় যে কবিতাটি উল্লেখ করেছেন তার মর্মাথ হল,যথাযথ ভাবে সংসারকে আগলে রাখতে গিয়ে মানুষ কখন নিজেই সংসারের হাতের খেলার পুতুল হয়ে যায়। এটি মূলত ব্যক্তিজীবনের নিজস্ব সংসারকেন্দ্রিক ভাবনা। মূল কবিতাটি এখানে পাবেন
http://www.lotakambal.com/lotakambal/post.php?id=3953

লেখক এবং আপনি 'মানুষ কেন সামাজিক পরিস্থিতির চাপে অসত্‌ হবে'এই বলে যা উল্লেখ করেছেন তা কবিতাটির বক্তব্যের সাথে কোনভাবে মেলানো গেলেও, এখানে একটা বড়সড় ব্যাপার থাকেই। যেমন কবিতাটি মূলত আত্মকেন্দ্রিক,সেটিকে বৃহত্তর সমাজ জীবনের সাথে মিলিয়ে দেওয়াটা আমার মনে হয় কিছুটা কষ্টকল্পিত। তৈরী হয়ে ওঠার মধ্যে গন্ডগোল আছে কি নেই সেটি এই কবিতার সাথে খাপ খায় না।

৫। আমার মনে হয়,সব্বাই কেন ভালো হলুম না,বা সব্বাইকে কেন ভালো হতে দেওয়া হচ্ছে না,বা সবাইকে কেন ভালো হতে হবে এই আক্ষেপের কোনো কারণ নেই। দ্বেষ,ঘৃণা,অসততা মানব চরিত্রের বেশ গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই রিপু গুলোকে বাদ দিয়ে সমাজ গড়ে উঠতেই পারে না। একধাপ এগিয়ে বলতে পারি এই গুলো না থাকলে বোধহয় মানবসমাজ এতদূর এগোতেই পারত না।

ভালো থাকুন।

অলোক ভঞ্জ said...

মঞ্জুশ্রী,
আমার লেখা যে তোমার ভাল লেগেছে সেটাই বড়ো কথা। সত্যি বলতে আমি এই ধরনের সিরিয়াস লেখা বড়ো একটা লিখিনা, আমি মূলত রম্যরাচনাই লিখতে ভালোবাসি কিন্তু তোমার কবিতার ঐ বনসাই কথাটা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, তাই এটা নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। অন্যদের ভাল লাগুক না লাগুক কিন্তু আমার চিন্তাধারাটা ব্যাক্ত করতে পেরে আমি খুশি।
এই ছবিটা দিয়ে আমি বোঝাতে চেয়েছি কিভাবে গাছকে তারের বেড়ী দিয়ে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে বনসাই করা হয়,যা মানুষ বনসাই করণেও একই ভাবে কাজে লাগে।

অলোক ভঞ্জ said...

তিতাস,
আমি কোন নতুন কথা শোনাতে চাইনি,বরং সমাজের পরিচিত দৃশ্যগুলোকে একটু অপরিচিত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করেছি মাত্র। আর কোন কিছু লিখতে গেলেই যে সব সময় নতুন কিছু বলতে হবে এমনও কোন কাথা নেই,তাহলেত কোন কিছুই লেখা যাবে না,কারন বেশিরভাগ গল্প,কাবিতা উপন্যাসইতো লেখা হয় সেই এক প্রেম-ভালবাসা আর সুখ-দুঃখ নিয়ে যা কোন নতুন কথা নয়...

শুধু সমাজ কেন...সব কিছুইত পরিবর্তনশীল,তাই বলে কি পরিবর্তন এর কথা ভেবে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হাবে...কবে তা আপনা থেকেই বদলে যাবে এই আশায়। কোন অসুখ চিরদিন থাকে না...হয় সারবে,না হয় মারবে,তাই বলে কি চুপচাপ বসে থাকবো তা নিয়ে চিন্তা করবো না, তাকে সারানোর চেষ্টা করবো না...এ কেমন যুক্তি। পূর্ণিমার চাঁদ যে অমাবস্যাতে থাকবে না সেতো সবাই জানে তাই বলে কি পূর্ণিমার চাঁদ নিয়ে কোণ কবিতা লেখা হবে না যেহেতু তা পরিবর্তনশীল। সব কিছু পরিবর্তনশীল হলেও সবেরই একটা বতমান অবস্থা বা অবস্থান থাকে।
তুমি লিখেছ “মূল্যবোধ ইত্যাদি বহুল প্রচলিত আপেক্ষিক অর্থবিশিষ্ট শব্দগুলোকে কেন যে চিরকালীন হিসেবে ধরা হচ্ছে,এটাও একটা ধাঁধা”।
শুধু মূল্যবোধ কেন - মানবিক গুণাবলী - প্রেম-ভালবাসা,সুখ-দুঃখ সবকিছুইতো আপেক্ষিক... কোনটাই চিরকালীন নয়...তাই বলে কি তা নিয়ে কোন সাহিত্য হবে না। ৫০ বাছর আগেকার আর আজকের প্রেমের সংজ্ঞা এক নয় কিন্তু ‘প্রেম’ শব্দটা একই আছে, কোথাও কি লেখা থাকে প্রেম (as on today), সুতরাং বর্তমানকে নিয়েই পথ চলতে হয় পরিবর্তনশী্ল ভবিষ্যতের কথা ভেবে নয়। তাহলে ১০০ বছর আগে লেখা জাতীয়সঙ্গিত বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হয়েও টিকে থাকতো না, প্রতি মুহূর্তে তাকে বদলাতে হতো।
এবার 'মমতাদিদির' কথায় আসি – মমতাদিদি ছাড়া পৃথিবীতে আর কেউ গাছেদের মর্ম বোঝেনা একথা আমি কিন্তু একবারও বলিনি। এই প্রসঙ্গে আমার প্রশ্ন - তোমার এই ৪০০ কোটির হিসেবটাও তো তোমার নিজস্য আন্দাজ, ওটাও পরিবর্তনশী্ল - কাল ওটা ৫০০ কোটি বা ৩০০ কোটিও হতে পারে তাই ওটা বলারও কোন মানে হয় না।
পরিশেষে মঞ্জুশ্রীর কবিতার যে মর্মাথ তুমি লিখেছো সেটা তোমার সম্পূর্ণ নিজস্য চিন্তাধারা, লেখিকার নয়। আমার মতে কবিতার মূলপর্ব যা ছিল সমাজকেন্দ্রিক শেষপর্বে অর্থাৎ বাস্তাবে তা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে, সেটাই আত্মগ্লানির প্রধান কারন। আমার মনে হয় এ ব্যাপারে একমাত্র মঞ্জুশ্রীই সঠিক আলোকপাত করতে পারে।

Unknown said...

এখানে সকলের লেখা পড়ে ও আমার লেখা সম্পর্কে আমার মতামত জানাতে গিয়ে লেখাটা বড় হয়ে গেল বলে আলাদা পোস্ট দিলাম। অলোকদা ও তিতাস, নিজেকে খানিকটা চেষ্টা করেছি ছেনেবেনে দেখতে,পড়ে দেখো্‌।

তিতাস বেরা said...

অলোকবাবু,আপনি ব্লগে একটি লেখা লিখেছেন,যেটি পড়ে আমার ক্লিশে মনে হয়েছে। আপনি লেখক,পাঠকের মতামতের তোয়াক্কা করতেও পারেন,না করতেও পারেন। আপনার লেখাকে আমি স্রেফ কিছু ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে দেখিনি (কারণ আপনি কোন ট্যাগ দেননি লেখাটির), বলতে পারেন একটি সাহিত্যকর্ম হিসেবে দেখেছি। যেকারণে মূল্যায়নটাও সেরকম ভাবেই করেছি।

কিছু বক্তব্যে অত্যন্ত হতাশ বোধ করছি। কোন গূঢ় তর্ককে স্রেফ কিছু বহুল প্রচলিত ফ্রেমে টেনে নিয়ে এসে স্থূলভাবে আলোচনায় একটু আশাহত।
১। আমি কি কোথাও বলেছি যে চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে থাকুন,সব আপনা আপনি ঠিক হয়ে যাবে। এই সমস্ত অপ্রাসঙ্গিক কথা টেনে আনার কি মানে? আমার উত্তরের প্রতিটি প্যারাগ্রাফ দয়া করে খুঁটিয়ে পড়ুন। আপনার কী মনে হল সব পুরোনো ধারণার পরিপন্থী আমি? নীলাকাশ বাবুকে যে উত্তর দিয়েছি তার দ্বিতীয় পয়েন্টটি দেখুন।
'১০০ বছর আগের জাতীয়সঙ্গীত'/প্রেম ভালোবাসা/পূর্ণিমা, ইত্যাদি নানা উদাহরণ টেনে আপনি যা বলতে চেয়েছেন তা মূলত আমার আগের উত্তরের অর্থোগোনাল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমি কি বলতে চেয়েছিলাম তা হয়তো আপনার দৃষ্টিগোচর হয়নি।
২।"“মূল্যবোধ ইত্যাদি বহুল প্রচলিত আপেক্ষিক অর্থবিশিষ্ট শব্দগুলোকে কেন যে চিরকালীন হিসেবে ধরা হচ্ছে,এটাও একটা ধাঁধা”। শুধু মূল্যবোধ কেন - মানবিক গুণাবলী - প্রেম-ভালবাসা,সুখ-দুঃখ সবকিছুইতো আপেক্ষিক... কোনটাই চিরকালীন নয়...তাই বলে কি তা নিয়ে কোন সাহিত্য হবে না। "
কী আশ্চর্য ব্যাপার দেখুন। বলছি এক, বুঝছেন আরেক। প্রেম ভালোবাসা ও অন্যান্য অনুভুতি চিরকালীন, কিন্তু তাদের মানেটা সময়ের সাথে সাথে পাল্টায়।(নিজেও স্বীকার করেছেন সেটা)। এসব নিয়ে হাজারবার সাহিত্যকর্ম করুন না, আমি কোথায় বারণ করেছি। শুধু মনে করিয়ে দিয়েছি এগুলোর কোনো নির্দিষ্ট অর্থ নেই। নিজেই একটি উদাহরণ দিয়েছেন (ছেলে স্কুল থেকে ফেরার সময় আহত পথচারীর সেবা করার ফলে দেরী হয়েছে, সেকারণে সে বকা খাচ্ছে বাড়ীতে)। এই উদাহরণটি টেনে বলি, যে বাবা মা এই কারণে বকাবকি করছেন তাঁদেরকে একেবারে ভিলেন ভাবার কারণ আছে কী? ইদানীং যা অবস্থা, পথচারীর সেবা করলে/তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলে, পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হবে, ও অন্যান্য নানান হ্যাঙ্গাম। বাবা মা, ছেলেকে ভালোবাসেন বলেই আগলে রাখতে চান। যুগটা যদি অন্যরকম হতো তাহলে নিশ্চয়ই বকাবকি করার দরকার পড়ত না। তাঁরা স্বেচ্ছায় বলতেন হ্যাঁ বাবা ঠিক করেছ। ছেলে বিকশিত হত (যেমন আপনি লিখেছেন)। বাবা মার নিজের ছেলেকে আগলে রাখতে চাওয়ার স্নেহকে খাটো করবেন কী করে? (এই প্রসঙ্গে বলে রাখি ঠিক বিপরীতও কিন্তু হতে পারে)
৩। বারবার করেই তো বলছি, যে সমাজ ব্যবস্থা সামগ্রিক মানবজাতির স্বার্থের নয় তা বদলে যেতে বাধ্য। এখন, কোন মহাপুরুষ এসে তো বদলে দেবে না। বদলাবে মানুষই, তার দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে। একবারো বলেছি নাকি, হে মনুপুত্রগণ তোমরা শান্ত হইয়া থাক। উপরোয়ালা বদলে দেবেন। বর্তমান সমাজব্যবস্থার (ব্যক্তিকেন্দ্রিক) ভূল ত্রুটি বিচারের সময় কী এসেছে? যদি এসে থাকে এবং আপনারা বুঝে থাকেন যা চলছে সব ভুল চলছে, তাহলে সমাজ বদলাবার জন্য লেগে পড়ুন না, কে বারণ করছে।
এই সব ভেবেই বলতে পারি, আপনি লেখায় যেসব বলেছেন, সেগুলো অধিকাংশই সামাজিক বিষয়ের ওপর যা অত্যবত জটিল এবং প্রায় ক্ষেত্রেই অতি সরলীকরণ দোষমুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। লেখাটি সেই দোষমুক্ত নয়, নতুন চিন্তার খোরাক কিছু দিতে পারে নি, তাই আমার ক্লিশে লেগেছে।
৪। ৪০০ কোটির উদারণের আগে একটা 'অন্ততঃ' আছে যেটা বোধহয় খেয়াল করেননি। সংখ্যাটা পৃথিবীর সাক্ষরতার হার থেকে নেওয়া। আপনি দ্বিমত হতেই পারেন। কিছু বলার নেই। কিন্তু ভেবে অবাক হচ্ছি পরিবর্তনশীল কথাটির উল্লেখ কি এতই পীড়াদায়ক যে সেটিকে বহু ব্যবহারে বিদ্রুপের স্তরে নিয়ে যেতে হবে? ব্যাপারটাকে মজলিশি আড্ডার স্তরে নিয়ে গিয়ে উত্তর দেবেন জানলে আপনার পোস্টে কমেন্টটি করতাম না।

এই সমস্ত কথা নেহাতই লেখা ভিত্তিক।

Aloke Bhanja said...

তিতাস,
লেখাটা নিজের চিন্তাধারায় লিখলেও সেটা পাঠাক কে কি ভাবে নেবে তা জানার একটা ইচ্ছে অবশ্যই থাকে,নইলে লেখাটা আমি মনের মধ্যেই রেখে দিতাম পোস্ট করতাম না...
আর এটাও সত্যি যে একই লেখা কারো ভাল লাগবে কারো লাগবে না...এটা শুধু লেখার ক্ষেত্রেই নয় সব ব্যাপারেই প্রযোজ্য,ভাললাগার এই বৈচিত্র্য আছে বলেই দুনিয়া চলছে,নইলেতো মুষ্টিমেয় কিছু ভাল জিনিষের জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যেত। ভাগ্যিস তা হয়নি - তাই এত অসংখ্য ভিন্ন ভিন্ন প্রেম-ভালবাসা টিকে আছে,তা না হলে কয়েকজনকে নিয়ে রীতিমত কাড়াকাড়ি পড়ে যেত,যা মোটেই সুখকার হতো না।
আসলে যে কোন চিন্তাধারার বিশ্লেষণ বড্ড আপেক্ষিক ব্যাপার যা কখনই অন্যের সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না,এমনকি নিজের বিশ্লেষণও সময়ের সাথে বদলে যায়। তাই মতের আমিল হতেই পারে তার জন্য মন্তব্য করবে না কেন...
আর সত্যি কথা বলতে কি - তোমার মতামতের গুরুত্ব আমার কাছে অবশ্যই আছে,কারন আমি তোমার এক গুণমুগ্ধ পাঠক সময় সুযোগ পেলেই তোমার,হিমাদ্রি এবং মঞ্জুশ্রীর লেখাগুলো পড়ার চেষ্টা করি,তবে কমেন্ট বড় একটা করতে পারিনা তার মূল কারণ আমার বাংলা টাইপ করতে প্রচুর সময় লাগে অত সময় দিতে পারিনা,এই কারনে আমার নিজের লেখাও টাইপ করে উঠতে পারিনা।

Unknown said...

http://www.publishedactivity.blogspot.in/2011/07/blog-post_13.html
এই লিঙ্কে লেখাটি আছে। নাম- 'অলোকদা ও তিতাসের দৃষ্টিতে আমার কবিতা'