Sunday 8 January 2012

ইছামতীর ধারে- টাক্কি টরে-টক্কা


1.1.2012-র 'তথ্যকেন্দ্র'-এ প্রকাশিত ইছামতী নদীর ধারে
'টাকী'-বেড়ানোর ওপর আমার লেখা

মঞ্জুশ্রী রায়চৌধুরী


ব্বাবা, এ কি নাম-‘টাকি কিনা টাক্কি!!!’ উপায কি, লিখতে বসে প্রথমেই যে নাম মাথায় এলো আরে আমি হলাম গে সুবিধেবাদী পুরোন পাপী কেন বলি। আসলে বৃষ্টিবিহীন গরমে বিদ্যুত্হীন টাকিতে পৌঁছে একে মাথায় টরে-টক্কা, তায় আবার ফার্স্ট থট’-কে প্রায়োরিটি দেবার ইচ্ছা মানে শিরোনামের ক্ষেত্রে আর কি। একজন নাট্যকার বলেছিলেন না, অলওয়েজ ওয়েলকাম ফার্স্ট থট। সেকেন্ড থটকে পাত্তা দিলেই বেটা সেজেগুজে আসে আর আসলী কথা ধামাচাপা তো সেই কথাটা মনে পড়ল, ব্যস- আটপৌড়ে সাজ পরে নেমে গেল- ইচ্ছামতীর ধারে- টাক্কি টরে-টক্কা।


টাকীতে দুদিনের টুপ্পুস ডুব খুশী যেমন দিয়েছে- তেমনি জ্বালিয়েছেও টুকটাক জানা ছিলই এটা মে মাস- হাওয়ায় গরম, খাওয়ায় গরম, ব্যবহারে গরম থাকবেই তাই ভোর থাকতেই ট্রেন ধরলাম আর রোদকে ফাঁকি দিয়ে টাকি ঢুকে পড়লাম সকাল-সকাল আমি উতলা-হ্যাংলা হলে কী হয় ওখানের লোকজন তো তা নয়রিক্সাওয়ালারা সবে ভ্যানের চাকায় জল ঢালছে, হাতলের গায়ে আগের দিনের লেপ্টে থাকা ক্লান্তি মুচছে, আর আমরা কিনা তখনই... তবু সওয়ারী তো, তাই লক্ষীর আগমনী গান শুনেই ওরা স্যাটাস্স্যাট হাত ধুয়ে রেডী ঝকঝকে ভ্যানের গায়ে আদরের আলতো চাপড় মেরে, লুঙ্গি কষে এঁটে, ঘুরিয়ে নিল ভ্যানের মুখ- ডেস্টিনেশনের দিকে একে এটা পর্যটনের অফ সিজন তায় রেগুলার লোকাল লোক বয়ে-বয়ে মানুষগুলো মনমরুনীতাই কলক্কাত্তাইয়া জিন্স-হাইহিল-সানগ্লাসের উল্লাস দেখে ওদেরও জোস জবরদোস্ত পকড় নিলউমর-ঘুমর প্যাডেল চালিয়ে দশ মিনিটেই পৌঁছে দিল বাংলোয় ওমা, পৌঁছে শুনলাম পঁচিশজনের একটা দল এসেছে হঠাত আর আচমকার সেই বেমক্কা ধাক্কায় উল্টে আমরা চীত্পাত বেলা বারোটা বাজবে, তারা ঘর ছাড়বে- তারপর...
মোট কথা এখুনি দেওয়া যাবে না অথচ গতরাতে ফোন করেই কিনা
- কী করবো দিদি, আপনারা মোটে সাতজন আর ওরা পঁচিশ অফ সিজনের এই বাজারে কী ট্যুরিস্ট ছাড়া যায়?
- তাতো যায় না, কিন্তু আমাদেরও যে ট্রেন জার্নি করে হালত্ খারাপ
- ইচ্ছামতী পাশেই, একটু নদীর বাতাস গায়ে মাখুন, সময় কোথা দিয়ে কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না
- জানি, জানি- ওসব জানি, কিন্তু ব্যাগপত্র নিয়ে...
- ও নিয়ে ভাববেন না, আমরা তো আছি
বলেই হাঁকডাক করে মালপত্তর নামাল আর জিম্মাদারী বদল হতেই ঝাড়া হাত-পা আমরা গেলাম দু পা দূরের ইচ্ছামতীর পাড়েনদীর ধার- খোলামেলা বিপুল বিস্তার... অথচ কোথায় হাওয়া? গরমে ঘোরাঘুরি দূর, ভোরের রেশমী আলোর কাব্যময়তাও উধাও হতে সময় লাগল মোটে তিন সেকেন্ড উপায়? সবার মন এইবার উল্টোপথে হাঁটছে- হাজার-একটা প্রয়োজনের কথা ভিড় করে আসছে। কেউ বলে বাথরুমে যেতেই হবে, কেউ জার্নিদিনের ঘেমো পোশাকের কাঁদুনীতে, কারুর ক্ষিদের চোটে চক্ষে ধাঁধাঁ ওফফ্... ফের ফিরলাম বাংলোয়
- না দাদা এভাবে চলছে না, ব্যবস্থা আমাদের চাই-ই চাই
- বারোটার সময় চেকইন, আপনি তার আগে তো ডিমান্ড করতে পারেন না-
ও, তাই বুঝি? এইবার ধরতে পারলাম ওদের ধাঁচাসুবিধে পেতেই ডিমান্ড এ্যান্ড সাপ্লাইয়ের গপ্প? আমিই বা কম কিসে, গরমের তাতাপোড়ায় এমনিতেই ক্ষিপ্ত।   
- তা আপনি কেন ইনফর্ম করলেন না? না জানিয়ে এসেছি তাতো নয়-
- কিন্তু আমরা বিজনেস করতে বসেছি-
- মশাই আমিও তো অনুগ্রহ চাইনি, জানিয়ে-শুনিয়েই এসেছিপার্টী পাকড়াতে তখন তো কত...
- কিন্তু চেক-আউট, চেক-ইন বলে একটা কথা আছে
- নিশ্চই আছে, ফোনে তালে কেন বললেন- এইসব গাঁয়েগঞ্জে আবার চেক-আউট, চেক-ইন বরং মিষ্টি হেসে কী বলেননি- এই গরমে আসছেন, আমরা তাতেই ধন্য...
এই তাল বুঝে খামচে ধরার উত্তরে সে কী বলবে ভেবে পেল না ম্যানেজার খানিক ভ্যাবলা মুখে চেয়ে থাকল, তারপর ধাঁ করে উঠে চলে গেলমিনিট দশেক বাদে এসে বলল-
- আমার রুমটা আপনাদের জন্য ছেড়ে দিচ্ছি, ওখানেই একটু মানিয়ে-গুনিয়ে বসুন, তারপর দেখি কত তাড়াতাড়ি...


গ্রাম্য আবহ, গ্রাম্যতায় মোড়া দিশপাশে গ্রামের ছেলেই ম্যানেজার, তো তার আবার রুমঐ যেমন হলে নিজেকে বেশ মশাই-মশাই লাগে- তেমন আর কীএকপীস মচমচে খাট, খোলা আলমারীতে গাদাগুচ্ছের কম্বল-বিছানা-বালিশ, মাটিতে ছড়ানো বঁটি, কাঁচি, ডেকচী এমনি আলাপালায় ঘর ঠাসা দমঐ গরমে কম্বলগুলো যত চোখে পড়ল, তত বাড়ল আমাদের হাঁপানী তায় আবার আগের দিনের ঝড়বৃষ্টিতে এন্টায়ার টাকির তার ছিঁড়ে বিদ্যুত বেসামাল জেনারেটর খানিক চালিয়ে খানিক বন্ধ দিয়ে কোনোমতে ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে হোটেলগুলো এবার সাতজনের চারজনে সামলেসুমলে ম্যানেজারের মুচমুচে খাটে চড়লাম আর বাকী কজন ঘুরে-ফিরে, ইয়ার্কীর চেষ্টা করে কাটিয়ে দিলাম সময় ইতিমধ্যে লুচি-তরকারীর ব্রেকফাস্ট সারা ভাগ্যিস্ রাঁধুনীরানী দুর্দান্ত রাঁধিয়ে- ভাগ্যিস্ নদীর ওপরের ডাইনিং রুমখানি সুবাতাসে প্রায় উড়ছিল- ভাগ্যিস্ ইছামতীতে তখন জোয়ার জলে ঠেউ আর আমরা উন্মন... তাই কোথা দিয়ে যেন বয়ে গেল বেলা ভাগ্যিস্-গুলোই সহনীয় করল দু/তিন ঘন্টার অপেক্ষা বারোটা বাজল- ওরা লেপা-পোঁছা সারল, আর আমরা যে যার ঘরে ঢুকলাম। গায়ে মাথায় জল ঢেলে, তাতাপোড়া মন ভিজিয়ে বসলাম জমিয়ে
 

এরপর কী হল? কী আবার- বুভুক্ষুদের যা হয় তাই হল স্নান-খাওয়া-গুলতানি আর অনেকখানি না পাওয়ার পর প্রাপ্তিসুখের আয়েশ নিতেই ফুরিয়ে গেল বেলা বিকেল পাঁচটা বাজতেই হাজির সকালবেলার ভ্যানওয়ালারাএখন আমরা খুশদিল- খেয়ালী মজায় যেতে একে-একে ভ্যানে চডে বসলামসেনাধ্যক্ষ শঙ্কর রায়চৌধুরীর বাড়ি, তার আধুনিকতা, খিলান-দরদালান-নাটমন্ডপে সাজানো পুরনো বাড়ির বৈভব- জোড়া শিবমন্দির- কৃষ্ণকিশোরের দোলমঞ্চ- রামকৃষ্ণ মিশনের আরতি দেখে, ইছামতীর তীরে এসে বসলাম একটু একটু করে পেরিয়ে যাচ্ছে যে সন্ধ্যাকাল, তার আঁধার তখন ঘন কষ্টিকালো পাথর কলকাতায় কত কৃষ্ণপক্ষ রাত কাটিয়েছি, কিন্তু দুষণমুক্ত গ্রাম্য পরিবেশ দৃষ্টিকে প্রসারিত হবার যে সুযোগ দেয়, তা শহরে কোথায়? দেখেও কতকিছু নজরে আসেনা নগরে না সেই মন, না অবকাশ, না আকাশের দিকে চোখ তুলে চাওয়াঅভিমানী আকাশ সাজলেও টেকেন টু বি গ্রান্টেড হয়ে পড়ে থাকে আনমনে অথচ এখানে! এসেছি মুক্ত মনে প্রকৃতির সমগ্র সুধা শুষে নিতেদৃষ্টি তাই একোণ-ওকোণ, ফাটল-ফোকর... যাচ্ছে সর্বত্রগভীর কালো আকাশে চাইলাম... দেখি আঁজলা করে ছড়িয়ে দেওয়া লক্ষ-কোটী তারার রাশি, ঘন হয়ে চিপকে আছে একে অন্যের গায়ে যেন চকমকী পাথর- যেন আদিম লোভের চোখ- অনবরত জ্বলছে-নিভছে আকাশ আলাদা, এ আকাশ টাকির একার সেই চাঁদোয়ার তলায় বসে, নদীর স্রোতের দিকে তাকিয়ে-তাকিয়ে ও সঙ্গী দুই গায়কের গানের সুরে ভাসতে-ভাসতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের হাতে ব্যাটন রেখে গেল আর আমরা? প্রায় ধ্যানস্থ অবস্থা থেকে খেলা শেষের বাঁশী শুনতে পেয়ে উঠলাম ও ঘরে ফেরার উদ্যোগ নিলাম ঘর মানে তাত্ক্ষণিকের ঐ আবাসস্থল- আপাততঃ ওটাই বিলাসপুর, ওটাই বাসা


পরদিনের ভোরে ফের ভ্যানে করে টাকির অন্যদিকে ঢুঁ তখনো সূর্য্যের তেজ ঝলসানো নয়, হাওয়ায় সোঁদা গন্ধসারাটা পথ জুড়ে কত যে ফলের গাছ... থরে থরে তাতে ফলে আছে আম-জাম-কাঁঠাল-খেজুর-করমচাহাতের কাছে নবোঢ়ার নোলকের মত আমগুলো দুলদুল করে দুলছে পরিমাণে এতই বেশী, যে নিজেরটা নিয়ে অস্থির কেউ আর অন্যেরটায় ফিরে তাকাতে পারে নামাটীতে অজস্র সবজে-সাদা জামরুল পড়ে বিছিয়ে আছে পরতের মত পাড়ার ছেলেপুলেরা খেয়ে-খেয়ে ক্লান্ত, এখন ছাগলের দল তার সত্কার করছে ছোট্ট খেজুর গাছ থেকে হাত বাড়িয়েই দিব্যি পারা যাচ্ছে খেজুরের থোকা  

আমরা যাচ্ছিলাম গোলপাতার বন দেখতে নদীর ধার ধরে, আলপথ মাড়িয়েহঠাত্ই দেখি নদী থেকে এক জেলে উঠে এলো পাড়ে আর হাটুরের কাছে বেচে দিল তার জলশষ্য আমরা ভ্যান থেকে লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে নেমে পৌঁছে গেলাম ব্যাপারীর কাছে।

- কী মাছ, কী মাছ?
- কাঁকড়া গ দিদি।
- চিংড়ী নেই?
- আসে আসে, হেইটুকুন্ পাইসি…..


জেলেভাই দেখালো কিছু লাফাতে থাকা বাগদা। কথা না বাড়িয়ে ওটুকু কিনে ফেললাম। সাইজে তর্জনীর চেয়ে কিছু বড়, মধ্যমার চেয়ে অল্প ছোট নিয়েই কত সোরগোল আমাদের। তারপর গোলপাতার জঙ্গলে পৌঁছলাম, দেখলাম অদূরেই বাংলাদেশের পাতার ছাউনী দেওয়া বাড়ি, মা কাপড় শুকতে দিচ্ছে, নিকোনো উঠোনে খেলা করছে ন্যাংটা খোকা, দিদি খোলামকুচির এক্কাদোক্কায়। ইচ্ছে করল যাই- গিয়ে বসি দু দন্ড, কিন্তু... 


ঘুরেঘুরে ক্ষিদে পেয়ে গিয়েছিল কী করি? মনে-মনে তাই ওপারের দাওয়ায় গিয়ে বসলাম আর ওদের সাথে মেলবার ইচ্ছা দিয়ে মেখে মুড়ি-চিঁড়ে-পান্তাভাতের স্বাদ নিলাম ভরপুর- মন ও চোখ খোলা রেখেই। তারপর ফিরলাম, গেস্ট-হাউসের রাঁধুনীকে চিংড়ীর দায়িত্ব সঁপে, স্নান-খাওয়া সারলাম ও ফের নদীর ধারে। তরতর করে ভেসে চলেছে ডিঙিনৌকা আর মাস্তুলে উড়ছে ভারতের পতাকা। হয়তো ওপারের নৌকাও পতাকায় সেজে এমনি করেই সতর্কতা রাখে। আমরা বাংলাদেশের একটা নৌকাও দেখিনি... যদিও তীক্ষ্ণ নজরে আপ্রাণ খুঁজেছিলাম তাদের।


ফলুয়ের মত জাল দিয়ে দেখলাম ছোট ছোট ছেলেপুলেরা বাগদা আর গলদার মীন ধরছে। অদ্ভুত সেসব কারুকৃতি। দেখতে-দেখতে বেলা গেল আর হঠাত্ সোঁ-সোঁ শব্দে নদীকে উথাল-পাথাল করে ধেয়ে এল রাশি-রাশি মেঘ। ছুটতে-ছুটতে ঘরে ফিরলাম, কিন্তু মন পড়ে রইল নদীতে। কীজানি ওসব ভয় দেখানো তান্ডব না সত্যি ভাঙনের শুরু!!!!! প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার অভাবে নাগরিক মন ধ্বংসের শব্দেও নূপুর বাজার আমেজ পায়। তাই ঝড়ের তীব্রতা কমতেই ঝুপড়ি চায়ের দোকানে- ছ্যাঁচাবেড়ার আড়াল নিয়ে নদীর দিকে মুখ করে বসে গেলাম- ফের। ঠেউএর সশব্দ উতরোল, পাড়ের কাছে নদীর দাপাদাপি আর কব্জির জোরে নৌকাকে সঠিক দিশায় নিতে চাওয়া মাঝিমাল্লার কসরত্ দেখতে-দেখতে সন্ধ্যা পেরোল। আমরা আবার ঘরপানে- ভিড় এড়াতে দিনের লাস্ট ট্রেন ধরব, তারই প্রস্তুতি এবার।


রাতের খাওয়া সারলাম। এখন বাজে নটা, গ্রামের হিসেবে বেশ রাত। সেই পরিচিত ভ্যান, সেই অন্ধকার, সেই নির্দিষ্ট লয়ে প্যাডেল টানার ছুপছুপছুপ শব্দ শুনতে-শুনতে পৌঁছে গেলাম স্টেশন। ধুধু করছে প্ল্যাটফর্ম- কলকাতার দিকে যাবার জন্য ঐ রাতে কোথায় মানুষজন? উপরন্তু বৃষ্টি হয়ে গিয়ে চারিদিক ধোয়া-ধোয়া পূণ্য আবহের ঠান্ডা ঝড়ো হাওয়া। মনে হচ্ছে যেন পূজায় বসবে প্রকৃতি তাই গা-ধুয়েছে, চন্দনগন্ধে প্রস্তুত হচ্ছে সে। সংলগ্ন জঙ্গলে জোনাকীর দিপদিপ, টিমটিম করে জ্বলতে থাকা লালচে-নিভু আলো আর নিস্তব্ধ লম্বা পড়ে থাকা প্ল্যাটফর্ম যেন একা যেতে-যেতে হঠাত্ হারিয়েছে পথ- অন্ধকারে। এমনই সময় মুগ্ধতার বোধ খানখান ছিঁড়ে দিশপাশ কাঁপিয়ে ট্রেন এসে দাঁড়াল স্টেশনে, আর আমরা যে যার ব্যাগ খুলে দুদিনের এই অতুল সুখকে চেপেচুপে ঠুসে ঢুকিয়ে নিলাম আর বার করে পড়ে ফেললাম নাগরিক সভ্য মুখোস। কাজে ফিরতে হবে না...


22 comments:

আল ইমরান said...

আগেও বলেছি, এখনও বলছি। তোমার বর্ণনা অসাধারন হয়। অনুষঙ্গ গুলো হয় আরও লা জবাব। তবে মাঝে মাঝে পড়তে গিয়ে একটু ছন্দ হারা হয়েছি। ঠিক কেন হয়েছি তা স্পেসিফিক করে বলতে পারবো না।
শুভকামনা থাকল।

Unknown said...

ছন্দহারা? কেন রে ভাই, মন অস্বচ্ছন্দে ছিল কি? প্রশ্নটা স্পেসিফিক্যালি আইডেন্টিফাই করতে পারলে না বলেই। আমি কিন্তু লিখে ভারি সুখ পেয়েছি গো।

TRISHITA BANERJEE said...

দারুন । ছোট বেলার সিঁড়ি বেয়ে আর তোমার লেখার হাত ধরে টাকি ঘুরে এলাম ।ভাল লাগল

clickzbysouvik said...

khuuub sundor....

Amio join korte chai tomader ekhane...

amar mail-id:
clickzbysouvik@gmail.com

invitation pathio...

ami kintu likhte pari na....
shudhu photo tulte pari....

amake ektu jayga dio tomader ekhane...

Unknown said...

তৃষিতা, তোমার উত্তর পেয়ে আমারও ভাল লাগল ভাই।

Unknown said...

কে ভাই তুমি clickzbysouvik? আমি যে কি খুশী হয়েছি তোমায় পেয়ে... না ডাকতেই এসেছ, এসেই পোস্ট রাখতে চাইছ, কমেন্ট করেছ... আপাততঃ এই তো ঢের।
একটা সাইট জনপ্রিয় হতে গেলে নানান ঘাঁচের সাংস্কৃতিক সঙ্গী ও গুণগ্রাহীর প্রয়োজন। তুমি 'লিখতে পারিনা' বলে কুন্ঠিত কেন ভাই, ফটো তুলতে পারো এটা কি কম? অপেক্ষায় রইলাম, তাড়াতাড়ি এসো ও তোমার মেল খুলে দেখো- আমন্ত্রণ পৌঁছে গেছে।

Himadrisekhar said...

প্রকৃতি চান করে পূজোয় বসছে, ভাবতেই কেমন ভালো লাগলো। টুক করে ঘুরে আসা গেলো টাকি। ছবি গুলো খুব সুন্দর। তবে ঐ ছোট বাচ্চাটির মাথায় কোন লাগেজ কি ? যদি হয় তবে ফোটোর ডেট টা পালটে দিও। ০১.০৫ শ্রমিক দিবস আর এ তো বাল শ্রমিক !!!!!

Unknown said...

অনেকদিন পরে এলে ও এসেই পড়লে বলে ধন্যবাদ হিমাদ্রী। তবে বালশ্রমিক মানে? ও'টুকু (দেড়/দু বছরের)বাচ্চা নিজেই তো টালমাটাল হাঁটে- শ্রম দেবার যোগ্যতা কই? খেয়াল করে দেখ, ও'দুই ন্যাংটা ভায়ের মাথায় বালিশ। মজা করে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে নদীর পাড়ে শোবে বলে। হঠাত্ দেখতে পেয়ে ছবি তুলে নিয়েছি... এই যা।

Dwaipayan Riddhy said...

besh bhalo lekha ta. amar khejur para-r chobi ta darun chilo. amar aam para ta kintu besh besh bhalo.

Unknown said...

ওরে ছেলে, এতো ছবি থাকতে কিনা নজর গেল নিজের ছবির দিকেই!!!! আরে হাত-ছোঁয়ানো আইডিয়াটা কার ছিল চাঁদবদন তা'তো বলো। দুষ্টু কোথাকার...

chandan roy choudhury said...

এই লেখা ধারেও কাটে, ভারেও কাটে- সঙ্গের ছবি উপরী পাওনা। তবে আমারটা কেন নেই?

অলোক ভঞ্জ said...

তোমার তথ্যকেন্দ্রে ছাপা ভ্রমণ কাহিনীতে তথ্যর চেয়ে মনের পথ্যই বেশি...সেটাই জরুরী। এখন ভ্রমণ বৃতান্ত জানার জন্য ভ্রমণ কাহিনী পড়ার দরকার হয়না। বেড়ানোর পথের হদিস দেওয়ার জন্যতো গুগুল মহারাজ রয়েছেনই, কিন্তু মনের হাদিস দেওয়ার জন্য কাহিনীটা অবশ্যই মনোরম হওয়া চাই, যেটাতে তুমি অতুলোনীয়া। ক্ল্যেসিকাল গানের ওস্তাদরা যেমন দু চারটে কথা নিয়ে কুকুরের হাড় চেবানোর মতো করে ঘন্টার পর ঘন্টা মনের সুখে নানানভাবে চিবোতে থাকে আর সুরের লালা ঝরিয়ে শ্রোতাদের বিভোর করে রাখে, তুমিও সেভাবে সামান্য কথা দিয়ে কাহিনীর বিন্যাসে পাঠককে বিভোর করে রাখো। ফটোগুলিও খুব ভালো এবং কাহিনীর সঙ্গে মানানসই।

Unknown said...

প্রশংসা বাক্যে খুবই অনুপ্রাণিত হলাম দাদা... কিন্তু এই ধরণটাই আবার শত্রু আমার। কেননা অধিকাংশ জায়গা থেকে আমার ভ্রমণকাহিনী রিজেক্টেড হয়েছে অতিরিক্ত অন্তরকথা বলি জানিয়ে। মানে কোথায় গেলাম, কি দেখলাম, কিভাবে যাব সেটাই হতে হবে মুখ্য... কেমন লাগলটা যথাসম্ভব এড়িয়ে। কিন্তু আমি তো আমিই, তাই চেষ্টা করেও বদলাতে পারিনি ধরণ আর তারই সঙ্গে কেউ-কেউ হয়তো দয়া-দাক্ষিণ্যের চোখের কোণে চায়... এই তো। তবে আপনার বলা 'ভ্রমণ বৃতান্ত জানার জন্য ভ্রমণ কাহিনী পড়ার দরকার হয়না। বেড়ানোর পথের হদিস দেওয়ার জন্য তো গুগুল মহারাজ রয়েছেনই' পড়ে মনে জোর পাচ্ছি দাদা। স্থির করে নিলাম যা আছি, যেমন আছি, তেমনই থাকব। হয়তো পাঁচটা পাঠিয়ে একটা প্রকাশিত হবে, তবু আপনমত থাকাটাই যুক্তিযুক্ত।

প্রসঙ্গতঃ বলি আপনার মন্তব্যের ধরণ দিয়েই বোঝা যায় আপনারও একটা নিজস্ব শৈলী আছে যা খুবই ব্যতিক্রমী, অন্যরকম। কিন্তু আপনি বড় অমনোযোগী... চঞ্চল। তাই লিখব লিখছি করে কাটিয়ে দেন বেলা, লেখেন না। এখানেও কতদিন আসেননি বলুন তো! পড়েননি, লেখেনওনি। এবার কি একটু মনোযোগী হবেন? নিজের প্রতি? আমার আনন্দবাজারের 'চানঘরে গান@চিতওয়ান'টা পড়েছিলেন? যদি না পড়ে থাকেন, এখানেই আছে, পড়ে জানাবেন। যতক্ষণ না লেখাপত্র রাখছেন, ততক্ষণ এমন রসিক কমেন্টই নাহয় পড়ি।

suchetana said...

ish amra kotobar taki jete jeteo r giye uthte parini..tomar lekhata bhari bhalo laglo..tomar description jemon sundar temon e akta bhishon natural flow achhe tomar lekhay. khub chhotokhato, khutinati, sadharon jinis gulo keo khub sundar r sohoj bhabe tumi express korte paro...akta jinis kokhono kheyal korecho ki? seta hochhe tomar naacher chhondo ta tumi kintu lekhar belay o maintain koro....biswas na hole kauke jiges kore jachai korte paro.

Unknown said...

তাই? সুচেতনা, তুমি বলার পর ফিরে পড়লাম এবং খুঁজতে চাইলাম ছন্দটাকে। আছে, আছে... খুঁজতে গিয়ে কোথাও কিছু পাচ্ছি যেন। তবে ছন্দটা 'সম' না 'বিষম' তা বুঝছি না। নিজের লেখায় সে খোঁজ বোধহয় পাইও না। তবে তোমার এই অন্যমাপের দেখার ভঙ্গী ও মজবুত অন্তরশ্রুতি থেকে এটা বুঝছি, সুচেতনার বুকে সবুজ খোলা মাঠ- যে মাঠ হৈ-হৈ বৃষ্টিধারায় ভিজছে- যার আঁচিল-পাঁচিল-প্রান্তর থেকে ফুল কুড়োতে শিখে গেছে সুচেতনা... সহজ উপায়ে।

Aloke Bhanja said...

আমি সত্যিই বড় অমনোযোগী.... আমি নিয়মকানুনের গন্ডিতে বাঁধা পড়তে চাইনা, মনোযোগী হতে গেলে কেমন যেন মনটাকে বেঁধে ফেলতে হয়...ইচ্ছে থাকলেও শারীরটাকেতো আর যেখানে সেখানে যেতে দিতে পারিনা তাই মনটাকেই ছেড়েদি, প্রজাপতির মত চঞ্চলভাবে উড়ে বেড়াক...আমি অনেক কথা বা লেখা মনে মনেই লিখি - তাতেই আনন্দ পাই, ভাবি লিখে রাখব কিন্তু লেখা হয়ে উঠে না আবার লিখবো ভেবে বসলে আর লেখা হয়ে উঠেনা। সব চিন্তাগুলো কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যায়, মনে হয় যেন লিখতে হবে বলেই লিখতে বসেছি, তখন আরেকটা মন কানের কাছে গুনগুন করতে থাকে এটাকি অফিসের কাজ নাকি যে করতেই হবে, ইচ্ছে না হলে উঠে পড়, অন্য কিছু কর যা তোর ভালো লাগে। এই করে আর লেখা হয়ে উঠে না...এমনকি কিছু লেখা কাগজে সেমিফইনাল হয়ে পড়ে রয়েছে কিন্তু ফইনাল আর করা হয়ে উঠছে না, টাইপ করাতো দূরের কথা।
তাছাড়া মধ্যে আমার এক সুস্থসবল সুঠাম ভাইপোর অকাল মৃত্যূতে খুবই মর্মাহত...সেই রেশটা এখনো কাটিয়ে উঠে পারিনি....
যাক এবার তোমার কথাই আসি....তুমি সব কিছু প্রকাশিত হবে কি হবে না সে নিয়ে এতো চিন্তিত কেনো...তুমি তোমার মতো লিখে যাও প্রকাশনার কথা ভেবে তোমার এতো ভালো লেখার ধরনটা কেনো তুমি পাল্টাবে...ওটা সবার থাকে না...সেই পুরনো বুলি আবার আওড়াতে হোল... ফলের আশা না করে কাজ করো...কিছু পাবর আশায় কোন কিছু করতে গেলে ভালোতো দুরে থাক তা আরো খারাপ হয়ে যায়...যে কারণে তেন্ডুলকারের শততম সেঞ্চুরিটা এখনো অধরাই রয়ে গেল...যেটা লিখে তুমি নিজে আনন্দ পাও সেটাই লিখবে তা প্রকাশিতি হোক বা না হোক তাতে কি যায় আসে...প্রকাশিত হলেই কি চারটে হাত-পা গজাবে...বরং ভেবে দেখো নিজে যখন আনন্দ পাও বা খুশি হও তখন মনের মধ্যেও নানান রঙের ফুল ফোটে...যেটা ঐ ইচ্ছার বিরুদ্ধে লেখা প্রকাশনাতে ফোটেনা।
গত পরশুই একটা অনুষ্ঠানে রাজন-সাজান মিশ্রার খেয়াল শুনলাম তবলায় কুমার বোস...সেখানে রাজানজি বলছিলেন যতক্ষণ না সুর ঠিকঠাক লাগছে বা নিজেকে খুশি করতে পারছি ততক্ষণ সে গানের কোন মুল্য নেই এবং সে গান শ্রোতাকেও খুশি করতে পারে না...তাই যেমন আছো তেমনি থাকো।

Unknown said...

একদম ঠিক বলেছেন। আমি জানি দাদা, এসব দিব্যি জানি। কিন্তু ঐ যে... শূয়োরকে মূলোর ক্ষেত দেখানোর মত আমাকেও
প্রকাশ হবার মজা আজকাল বড্ড জ্বালায়- যার আকার খানিকটা লোভের মত। লিখতে বসেই মনের কাছে প্রস্তুতি তৈরী হয় এ'লেখা এখানের জন্য ও ও'লেখা ওখানের। কেননা একেক দপ্তরের এক-এক ক্রাইটেরিয়া। কেউ 700 শব্দসংখ্যায় চায় তো কেউ 5000. কারুর লেখায় অধিক তথ্য অল্প গপ্প, কারুর চাহিদা কথোপকথনের স্টাইল বর্জন। এতসব মাথায় রেখে যখন লিখতে বসি, তখন সাথে-সাথেই কানের পাশে 'পছন্দ নয়'-টাও গুনগুনগুন গান শোনাতে-শোনাতে চলে। শেষ অবধি তো দাদা পাঠকের কাছে পৌঁছনটাই উদ্দেশ্য... যতক্ষণ না পরিচয় তৈরী করতে পারছি, ততক্ষণ রাজার হুকুম মাথায় নিয়ে চলা ছাড়া রাস্তা কই? প্রকাশিত হবার 'ইচ্ছে' আমার আড়ে-বহরের যে মার খাচ্ছে, তা'তো আর দেখানো যাচ্ছেনা... কোনদিন জায়গা যদি পাই, তবে সে কষ্টর শোধ তুলেই ছাড়ব। প্রাতিষ্ঠানিক পত্রিকারগুলোর নাক বড্ড উঁচু দাদা। ওরই মধ্যে কোনরকমে আরকি অস্বিত্ত্ব বাঁচিয়ে-বাঁচিয়ে- নিজস্বতাকে চেনানোর চেষ্টা করি। ঐ যে বললাম, শেষ অবধি আমি আমি-ই।

Asim said...

ami tathyakendra porei ekhane elum. okhane ki ektu chhoto? chhibiglo byapok.

Unknown said...

হঠাত্ ইংলীশ ফন্টে লেখা কেন অসীম- বাংলা হরফ কি হল?
হ্যাঁ, দপ্তরে যা পাঠিয়েছিলাম, তা এখানে দিয়েছি। কিন্তু কাগজঅলাদের কথোপোকথন শৈলীতে আপত্তি। তাই ওই পার্টটুকু কেটেছেঁটে আরকি...
অনেকদিন পরে এলে ভাই, পোস্ট না দিলেও মাঝেসাঝে মন্তব্যতেই এসো নাহয়।

Samran said...

বেড়ানোর গল্প আমার বরাবরই ভীষণ পছন্দের।
তোমার চোখ দিয়ে আমিও খানিক ঘুরে এলাম আর ওই, ওপারের দাওয়ায় বসে ইচ্ছে দিয়ে মাখা মুড়িও খেয়ে এলাম..

Indira Mukhopadhyay said...

ekhono jaoa hoye uthlona go Manjushree! darun lekhata hoyechhilo....ageo porechhi abaro ghure gelam bhai! Banglay likhlam na ...very sorry!

Unknown said...

ইন্দিরা, তুমি দুম করে অনেকদিন পরে ও একবার পড়ে নেওয়া লেখা আবার পড়তে এলে জেনে কি ভাল যে লাগল। এই প্রথম 'রিপিট ভ্যালু' কাকে বলে তা অনুভব করলাম। উত্সাহ দেওযার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।