Sunday 26 November 2017

পরজন্ম তোর নৃত্যমুখর হোক্ সোনা

মঞ্জুশ্রী রায়চৌধুরী

দেবাশীষ সেনশর্মা
17ই জুলাই 2014

কি যে লিখি... দেবাশীষ সেনশর্মা। আমার প্রিয়তম এই ছাত্রটি কাল অনন্তে মিলিয়েছে নিশ্বাস।
গুণের আকর তোর গল্পের মত ছিল জীবন। সবটার হিসেব বুঝলি না বলেই গেলি অবেলায়। আত্মীয় বিহীন (নিজ দোষে), বন্ধু বিহীন (নিজ দোষে), ছাত্র বিহীন (নিজ দোষে), গুরু বিহীন (নিজ দোষে), আশ্রয় বিহীন (নিজ দোষে) কিভাবে কাটালি কাল- আহা...
ভগবানের মার দুনিয়ার বার যে বলে, তুই তার সেরা স্যাম্পল।স্কিত্জোফ্রেনিয়ার প্রকোপে পাগল কুকুরের মত দৌড়ে বেড়ালি। ভালবাসার জনকে দূরে ঠেললি, ভুল লোককে বিশ্বাসে নিলি। অবশেষে? না পেলি সহানুভূতি না মায়া না করুণা কারুর। হায়, কে দায় নেবে রে তোর যদি অবাধ্য হোস? অবাধ্যতার এ’ দায় ব্যক্তি তোরও নয় দেবাশীষ জানি আমি, জানে সবাই। রোগ তোকে নিয়ে গেছে ভোগে।
কি পাপ, কি পাপ। অপূর্ণ মানুষটাকে ঈশ্বর পূর্ণ মানুষের ভান দিয়েছেন এমন, যে সে নিজেই নিজের সূতো ছিঁড়ছে এ কথাটা বুঝলোই না। এই নিয়তিই সাজানো ছিল রে... গুণ তোকে তাড়িত করবে আর অপারক তুই ভেঙে পড়বি যত্রতত্র।
ঈশ্বরের সেরা খেলার পুতুল ছিলি তুই। নাহলে একদিকে এত গুণের সমাহার আর অন্যদিকে বিভ্রান্তি? মরে বেঁচেছিস দেবাশীষ, মরে বেঁচেছিস। ফ্রেশ জন্ম নিয়ে আবার ঘুরে আয় গুণনিধি আমার।
তোর উদ্ভাস তোকেই পোড়াবে, এ জন্মের এমনই ছিল ভবিতব্য, মেনে তো নিতেই হোল শেষে। তাই না? নতুন জন্মে অসুস্থতা মুছে সুস্থ ঘরে আয়... কিই বা চাইতে পারি এ’ছাড়া।
কাল বুধবার, আমার কাছে ক্লাশ করতে আসা ছিল যে সময়, তখনই তুই ফুড়ুত হলি... সকাল দশটা।
বড় গুরুর কাছে বড়র টানে বড় খেলা খেলতে চলে গেলি। এবার মাঠ সাফা করে আসিস দেবাশীষ... সব জঞ্জাল ছেঁটে। এ জন্মের লেফ্ট ওভার শেষ করিস আগামীতে। শান্তি, শান্তি, শান্তি। পরজন্ম তোর নৃত্যমুখর হোক্ সোনা।

Friday 25 March 2016

পন্ডিচেরি

13th. Oct. 2015-য় গিয়েছিলাম পন্ডিচেরী, কন্যাকুমারী, উটি, মুদুমালাই, বান্দিপুর, মহীশুর হয়ে চেন্নাই। লম্বা সফর| ওখান থেকে FB-তে পাঠিয়েছিলাম এই ছবি ও লেখা  যা আজ 25শে মার্চ আদরের মনফসল-এ রাখছি|


মঞ্জুশ্রী রায়চৌধুরী
এখন আমি পন্ডিচেরির বীচে বসে লিখছি। এইমাত্র অরবিন্দ আশ্রম থেকে meditation সেরে এখানে এসে বসেছি। সমুদ্রজল নাক অবধি ছুটে আসতে চাইছে। ঢেউ ভাঙ্গার শব্দ, লোনা গন্ধ, সোঁদা হাওয়া, অমাবস্যাতিথি... সব মিলিয়ে এক অনিত্য সত্য চোখের ওপর মনের ওপর তার আধিপত্য কায়েম করছে আর অন্যকে শোনানোর ছলে আমি ক্রমশ গ্রস্থ হচ্ছি, হাত ধরছি প্রকৃতির।





Thursday 24 March 2016

এমুর ডিম ও চাঁদের গান

মঞজুশ্রী রায়চৌধুরী

নিয়ে দৌড়েছি দিন ‘দারিংবাড়ি’
রঙ উড়েছে মনে সবুজ বনের
বৃষ্টিবৃক্ষে হাত পেতেছি যত। 
আকাশ ছিল আবছায়াতে আঁকা-
ভিতরপুরের অঝোর অভিলাষা
স্বপ্নস্বপ্ন চাঁদ হয়েছে তত।
                                   
                                   ম্যাগনেটিক হিল| লাডাকে দেখেছিলাম তারপর এখানে... 'দারিংবাড়ি'তে|
                             
প্যাঁকাটির পোজ

হাটের পথে ‘কাঞ্চাম্মা’। এই হাসিটা যে কবে হাসতে পারব!!!!!!!

কফিবাগানে কালোবরণী
                                                                             
                                                                   
                                                                         ঘুর্ণিপাকে নদী                                                                                                  

কে কাকে কি বলছে কেজানে। কিংবা ছাগলা শেখাচ্ছে‘ব্যা’ সঙ্গীত, আর সঙ্গীতকার ব্যস্ত তালিমে|

লাভার্স প্যারাডাইস

জঙ্গলে...‘পুতুদি’ ঝর্ণাধারায়|

আহ্লাদী এমু



প্রাণের চাষ… এমু|

মালী, বনমালী ও খলবলূূি


, ডিম| এমুপাখীর ডিম| দেখার জন্য দশটাকা আর ভাঙলে নেবে সাড়ে বারোশো|



জঙ্গল, পুতুদি নদী ও আমরা ন’জন (সঙ্গীতকার ছবি তুলছেন)

ক্যামেরাওম্যান

নাকফুলে ‘কাঞ্চাম্মা’

শিশু ভোলানাথ



কফি আর গোলমরিচের চাষ হয় এই বাগানে
                                                                       
                                                                         পাশ ফিরে সুধী









Sunday 24 January 2016

"কবি ও ডোম"

"কবি ও ডোম"
-আল ইমরান

রাতের নগর বা নগরের রাত দেখিনা অনেকদিন,
রাস্তার মাঝে মাঝে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা
নিয়ন আলো ছড়ানো ল্যাম্পপোস্ট আর
একদল গৃহহীন মানুষের রাত্রিযাপন।

এইত সেদিন, 
রাতজাগা চাঁদ আর নিয়ন আলোর স্রোতে
আনমনে কিছুক্ষন ভেসে থাকার অভিলাসে
রাতের নগরে বেড়িয়েছিলাম,
একাকি নয়, প্রেয়সীর হাতে হাত রেখে নয়,
বন্ধুর কাধে কাধ মিলিয়ে।

বন্ধুটি লাশকাটা ঘরে,
এক আহত হৃদয় ব্যবচ্ছেদে ব্যাস্ত ছিল।
হৃদয় আহত হলেও
দেহটি ছিল নিহত, বেনামি লাশের।
নিয়ন আলোয় নগর ভ্রমনের প্রস্তাবে
এক কথায় রাজি হয়েছিল সে।
সেই লাশকাটা ঘরে
কত হৃদয়ই না ব্যবচ্ছেদ হয় প্রতিনিয়ত।
মরে গেছে বলে সেই হৃদয়ের রক্তক্ষরন
দেখা হয় প্রায়শই।
কিন্তু বেঁচে আছি বলেই হয়ত
এই হৃদয়ের রক্তক্ষরন দেখা হয়না সহসা।


রাত যখন গভীর হয়,
এই নগরে বাড়ে গণিকাদের আনাগোনা।
সেই মিছিলে,
পরিস্থিতির শিকার কিছু জীবন ভেসে যায়।
মানুষে মানু্ষে এই যে ভেদাভেদ,
ল্যাম্পপোস্ট আর এই নিয়ন আলো
আমার শেখায় সেরা বাস্তবতার পাঠ।

Tuesday 13 October 2015

ছোট্ট ভাবনা-৩১



কাব্যিক কল্প শৃঙ্গারের আকাঙ্ক্ষা,
নিগুঢ় সুখ শীৎকারের অপেক্ষা।

Sunday 30 August 2015

রাতের কথকতা

একটি রাত, 
একটি বিনিদ্র রাত।
একটি গল্পময় রাত,
একটি কাব্যময় রাত।
কষ্ট বিনিময়ের রাত,
উষ্ণতা ভাগ করে নেয়া রাত।
আধো ঘুম আধো জাগরনে
স্বপ্ন অথবা দুঃস্বপ্ন দেখা রাত।
মনের গহীনে জমে থাকা,
চেপে রাখা, দুঃখ প্রকাশের রাত।
দ্বিধা ভুলে, ভুল গুলো মেনে নিয়ে,
নিঃসঙ্কোচে ক্ষমা চাওয়ার রাত।

মেঘে ঢাকা রাত,
বৃষ্টি ভেজা রাত।
তারা ভরা রাত,
ভুলে যাওয়া রাত।
স্মৃতি কাতর রাত,
ঘুমে কাতর রাত।
জোছনা বিহার রাত,
প্রেম নিমগ্ন রাত।
আরেকটি ভোরের স্বপ্নে বিভোর
আশায় বেঁচে থাকার একটি রাত।

Wednesday 22 July 2015

সুকুমার চৌধুরীর ১০টি কবিতা


সুকুমার চৌধুরীর টি কবিতা

রহস্য
একজন শিল্পী জানেন
অনুভবের কোনো অবয়ব নেই 

তিনি তাকে তরলতর কোরতে চান
তিনি তাকে জলের মতো ব্যবহার করেন 

মূর্ত্ত হোলে খুশি হন
না হোলে বিমূর্ত্ত থাকেন

একা ভারী একা আর তাঁর মুখে
লেগে থাকে বিষন্ন হাসির রহস্য

সম্পর্ক 
ভয় মুল্য পায় তবু প্রদাহবিহীন এই স্পর্শগুলি 
রয়ে যায় সন্তর্পনে তাদের আবহগুলি কাজ করে
যায় কেউ বুঝতে পারে না

আমরাও পরম্পর ছুঁয়ে থাকি কোন উত্তরণ হয না
আঙুলগুলি ছোঢৌ হয়ে আসে ম্পর্শগুলি ক্ষীণ

ছুঁয়ে থাকি ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি একাত্ম হওয়ার
কথা ভাবতে পারি না

ভাঁড়
কিছুটা পরত ছিল মিথ্যের
জানি আমি জানি
সে শুধু মোডক
শ্তধু অধিবাসে লাগে

অভিষিক্ত হয়ে গেলে
পাত্রটির প্রগাঢ় বিজন
অল্প অল্প ভরে দিতে গিয়ে
চন্দ্রাহত আমি
চেয়ে দেখি
শূণ্যতার গ্রহনপ্রতিভা নেই
শুধু
ফুটো ফুটো
অহঙ্কার আছে

পরিত্রান
তুলে ধরি যাপন অন্য কোন পরিত্রান নেই
সাম্যতা কি কোনদিন হয় হয়েছিল দাঁতে দাঁতে চেপে
সংসার নামের এক অজর মানবী চেয়েছিল নিরুদ্বেগ
তার দুধে ভাতে আজ মাছি হয়ে বসি চেটে চেটে
তুলি পরিত্রান যাপনের মেধ মল্লার  
আর কোন শিল্প নেই কোন স্বেদ গান

বিলাস
ফিরে আসে ঘড়ির কাঁটারা তখন উল্ঢো দিকে হাঁটে সময়ের এই
থেমে ষাওয়া কেউ কেউ টের পায় কোন মুসাফির , কেউ বিলাস
বিজন

কিভারে সে ফিরে আসে সন্তর্পন কুয়াশার আস্তরন ফুঁড়ে ছোট 
ছোট অনুষঙ্গ নিয়ে, কাতর সম্তাপ নিয়ে, সন্ধ্যা সকালগুলি নিয়ে
স্মৃতিময়

কেন যে সে ফিরে আসে অশোক বৃক্ষেরা ভাবে, কান্ডহীন শোকাভ
চাদ্দিক ফের ঘন হয়ে আসে বৃষ্টি হয় অনুভূত হয় শূণ্যবোধ অগম
উদ্ধার

নিস্প্রান আলাপচারি, মুসাফির থম্ নিঃশব্দ শাসন করে মৃত্যু, অশরীর
ফিরে আসে পুরোনো দিনের গল্প স্মৃতি ৎপর, হিম, আর অধোমুখ বিমর্ষ
বিলাস

নীল
আহত হই আহত হোতে থাকি
আর কিছু দিয়েছে কি সংবেদন ?

এত যে আঘাত এত ক্ষত
এত যে আঘাত এত নুন

থিতানো বারুদগুলি ভিজে ওঠে
স্ফুলিঙ্গবিহীন

শুধু একটি অঙ্গার গন্ধ
ধরে রাখে শীর্ণ অভিমান

এইসব অভিমান থেকে কোন যুদ্ধ নেই
যুদ্ধবিহীন কোন উত্তরণ এখনো সুদুর

বাতাসে ছড়িয়ে যায় বিষ
আকাশে ছড়িয়ে যায় অভিমান

সমূহ যাপন জুড়ে
সংবেদের নীল

আহত হই
আহত হতে থাকি

অনর্গল
মুছে যাও যেন ক্লাসবুক, রকম ব্যপ্ত চরাচর
ইরেজার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তুমি শান্ত করো 
সভ্যতার তাব ম্যাডাম  
ভয় পাও শান্ত হয়ে আসে দিগ্বিদিক
তর্জনীর ধারে আর ভ্রুকুটির গন্ধ নয় অবসন্ন ক্ষমা

মুছে যাও মুছে যেতে যেতে দৃষ্টি উড়িয়ে দাও
আর জেগে ওঠে বোধ বোধের গোপন বিশ্ব
গূঢ় অনর্গল

আমার গোপন কোন বিশ্ব নেই আমি ওই
মুছে যাওয়া দেখে ফিরে আসি ফিরে ফিরে আসি

গিঁ
ছিটগ্রস্ত গিঁটগুলি কলাদের মতো 
ভিজিয়ে দিয়েছি আজ
রক্ত রমনে স্যানেটোরিয়ামের মতো
নিথর য়র্কশপ অদ্ভুত একাকী শুধু
য়ে রকম পরিবৃতি চেয়েছিসে রকম শুধু 
য়ে রকম পল্বল চেয়েছিসে রকম আহ
কতদিন পর এই অদ্বতীয় ভুমন্ডলে
থেমে গেল ঘড়ি আর নির্বীষ ঘোড়ার মতো
ভূতচতুর্দশী
তা রা পা দুখানি
ঠুকে ঠুকে ঠুকে
নার্শিশাশময়

অন্তরা
কথাগুলি শেষ হয়ে আসে পালাতে পালাতে
আমরা ক্রমশঃ হয়ে উঠছি সন্ধিগ্ধ শব্দহীন
খাটো করে ফেলছি জমি দীর্ঘদ্রবণের দিন
শেষ হয়ে এলো

কতদিন সম্মিলনী নেই ইডিয়টবক্সের সামনে
ঘন হয়ে উঠছে আমাদের লিমিটেড অবসর 

চারিত্র
দাঁতের ফোঁকর যেন।
ফেঁসে যায় লেগে থাকে মাংসগন্ধ।
সুগন্ধি রুমালে ঢাকি দুর্বলতা।
চোখে সানগ্লাশ।

কত মাংস চেয়েছি জীবনে ।
কত নষ্ট রাগ । মেটেনি
আত্মার খিদে ।

দাঁতের ফোঁকর যেন