Tuesday 1 November 2011

প্রাতিভাসিক

তোমার লহমার ঔদার্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে
নগ্ন পায়ে হেঁটে পেরিয়ে যেতে জীবনের এই উৎপথ
প্রত্ননগর পাড়ি দিয়ে আমাকেই বার বার তোমার
কাছে পৌঁছাতে হবে লক্ষ লক্ষ যুগের
অন্ধকার পার হয়ে একা?
তোমার মায়া হয়না!
নদী, সমুদ্র পেছনে ফেলে গহীন অরণ্যের
লোমশ অন্ধকারে আমি অবশেষে খুঁজে পাই
তোমার পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ
বাকীটুকু আমার অতিচেনা পথ
একদিন তুমি আমি
জ্যোৎস্না দিয়ে তাম্বুল খেয়ে
হৃদয়ের হ্রদে নাইতে গেছি
এই ঘুলঘুলি পথ বেয়ে,
পৌর্বদেহিক সাঁকো পারাপার করি প্রতিরাতে
পায়ের পাতা, হাঁটু, উরু, কটি, তলপেট বেয়ে
নাভীটাকে আলতো ছুঁয়ে প্রায়ই পৌঁছে যাই
পাঁজরের ঘেরাটোপে কাঁঠালিচাপার সুবাসটাকে ছুঁই,
এখানেইতো ছিল শিল্পের প্রশস্ত পতিত ভুঁই!
আজ কিছু নেই পাঁজরের তলে শুন্য গহ্বর ছাড়া
আমার ঠিক মনে নেই, তুমি মনে করে বলতো মন!
ওখানে হৃদপিণ্ড ছিলো না কি কোনদিন? তুমি ভুলেছ
যদি আমিও ভুলি, কোনদিন ভুলবে না কাপ্তাই হ্রদ,
ভুলবেনা পেডাটিংটিং সেই সব সুখরাঙা দিন
ওরা মানুষের মত স্মৃতিভ্রষ্ট নয়।

12 comments:

Unknown said...

কতদিন বাদে এলে চৈতী, তোমার কবিতার অপেক্ষায় থেকে-থেকে অবশেষে...
অবশেষে
‘জ্যোৎস্না দিয়ে তাম্বুল খেয়ে
হৃদয়ের হ্রদে নাইতে গেছি’

পড়ে আমি মুগ্ধ। রূপক অনেকেই ব্যবহার করি, তবু বলতেই হল, তুমি শ্রেষ্ঠ। চেষ্টা করছিলাম এর একটা মাপসই জবাব কবিতাতেই দিতে। কিন্তু...

কি অদ্ভুতভাবে তুমি শব্দগুলোকে বিন্যস্ত করো চৈতী, যা একান্তই তোমার... নিজস্ব। একটা অপ্রত্যাশিত শব্দবন্ধর পাশে দিব্যি এনে রাখো আলতো টিমটিমে একটা আলোছায়া শব্দ। যেমন- ‘পৌর্বদেহিক সাঁকো পারাপার করি প্রতিরাতে’... থেকে ‘পাঁজরের ঘেরাটোপে কাঁঠালিচাপার সুবাসটাকে ছুঁই,’ অংশটুকু। বলতেই হবে, কবিতায় তুমি অনবদ্য। সমগ্রটার দহন নিয়ে পুড়ছি চৈতী, তবু বুঝিনি... ‘পেডাটিংটিং’ শব্দ। রসগ্রহণে এ শব্দ কোনো বাধা নয়। তবু জানার ইচ্ছে... কি মানে?

স্বতঃসুখী ছিলেম মায়া-কন্যে
মনফসলী শিউলি উঠোনেতে
গান-সোহাগী কাব্যকলি হেম
এলে আচম্বিতে।

আল ইমরান said...

বেশ ভালো শব্দচয়ন। শেখার আছে অনেক কিছু। ভালো লাগলো।

TRISHITA BANERJEE said...

বাহ। এক কথায় অনবদ্য

Unknown said...

আমার-ও ভালো লেগেছে ।

চৈতী আহমেদ said...

তোমাকে না পড়তে দিলে সত্যি মনে হচ্ছে লেখাটার প্রতি খুব অবিচার করা হতো, এটি পড়েছে অনেকে কিন্তু এত পক্ষপাত নিয়ে কেউ বলেনি মঞ্জু! যাই হোক, চুপি চুপি তোমাকেই বলি, তোমাকে লেখা পড়াতে আসলে ভয় পাই, তুমি এমন খুটিয়ে পড়ো আর ভালো লাগুক মন্দ লাগুক তা এত সুন্দর করে বলো, তার উত্তরে আমি বলার জন্য খুঁজে পাই না। আমার দোষ কি জান? একটা কিছু লিখে ফেলার পরে সেটি নিয়ে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করে না,
পেডাটিংটিং> এটি আমাদের রাঙামাটিতে একটি রেস্টুরেন্টের নাম, ভাষাটা স্থানীয় আদিবাসীদের, নৌকায় চড়ে গভীর অরণ্যের মধ্যে একটি পাহাড়ের উপর ছিলো এই রেষ্টুরেন্ট, বিশেষ কিছু পাহাড়ী খাবার পাওয়া যেত ওখানে, শব্দটার খুব সুন্দর একটা অর্থ জেনে এসেছিলাম এখন মনে নেই, পরে জেনে তোমাকে জানাবো। ভালো থেকো!

Anonymous said...

লেখাটা আমার খুব ভাল লাগলো।

Unknown said...

পক্ষপাত মানে? ও... বড্ড গ্যাদা না, ঠিক আছে এবার চশমা উল্টে নিয়ে পড়বো, তখন কেমন লাগবে আমি দেখব। আমায় তো জানই, সেই 'লোটাকম্বল' থেকে... মন্দ খুঁজতে চাইলে কিন্তু পাবই আর বলতে চাইলে থামতে পারবো না... মানে পারবোই না। সুতরাং পাগলা, সাঁকো নাড়িও না।

সত্যি ভাল লিখেছ, এটা তোমায় মানতেই হবে। তোমার একটা মনোভঙ্গী আমার দারুণ লাগল। 'একটা কিছু লিখে ফেলার পরে সেটি নিয়ে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করে না।' এটা সামনের দিকে তাকানো একটা সফলতা-কামী মানুষের আদত লক্ষণ চৈতী। আমি পারিনা বলে নিজেরই বৃত্তে ঘুরেফিরে বড্ড সময় নষ্ট করি। তোমার এই বাক্যটা আমার জন্য খুব প্রয়োজনীয়। মনে রাখব, এবং রাখবই। তবে তোমাদের মত কিছু মানুষের সঙ্গে কথা না বলে পারব না, এটাও ঠিক। যাই হোক্, সমগ্রটার সঙ্গে একটা কম্প্রোমাইজ করব, ব্যালান্স করব, এটাই হচ্ছে কথা। ভাল থেক, আরো লিখ।

Unknown said...

প্রিয় Anonymous, 'লেখাটা আমার খুব ভাল লাগলো' তো বুঝলাম। এখন এই 'আমি'টা যে কে, তা স্পষ্ট হলে আমাদেরও ভাল লাগত ভাই।

চৈতী আহমেদ said...

পেডাটিংটিং> এটা চাকমা ভাষা এর অর্থ হলো 'পেটপুরে খাও'

চৈতী আহমেদ said...

তুমি বলছো বটে সমগ্র, বিষয়টা কি বলতো, বুঝতে পারছি না কিসের সাথে কম্প্রোমাইজ করার কথা বলছো?

Unknown said...

ওমা, বুঝলে না? আমি বলতে চাইছি তোমার মত করে আমিও এবার থেকে যা লিখে ফেলেছি তার সঙ্গে আর বেশী পরিমাণে লটকে থাকব না। অথচ কথা বলতেও তো সাধ যায়... সেই সাধকে পাত্তা দিতে গেলে সময়ও যায়। তাই আর কি ভাবছিলাম, এ'সমগ্রটার সঙ্গে একটা কম্প্রোমাইজ করে চলব, যাতে অযথা না নিজবৃত্তে ঘুরপাক খাই, আবার আড্ডাও না হারাই।

তোমার কাছে পেডাটিংটিং শব্দটার মানে জেনে ভাল হল। কেজানে, আমিও হয়তো কোথাও কখনো...

রাগ করবে নাকি?

চৈতী আহমেদ said...

নিশ্চিন্তে তুমি তা করতে পার, একটুও রাগ করবো না, এখানে রাগের কোনো কারণ দেখছি না।