
এক ঘরের ভেতরে সে , বসে আছে বিছানায়। শুভ্র রাত্রিবাস গায়ে দাঁড়িয়ে তিন নারী তার ঘরে। দুজন দরজায় দাঁড়িয়ে তামাশায় মগ্ন। তৃতীয়জন তার পাশে, তার কাছে। হাতে হাত। চোখে চোখ। উশখুশ সে। উদ্বিগ্ন দুচোখ বারে বারে দেখতে চায় দরজার এপাশে কে কী করছে। কিছু একটা খুঁজছে। কাউকে খুঁজছে, আমাকে কী?
সেলফোন হাতে নিয়ে ছবি দেখার চেষ্টা করি। তুমি নাকি অনেক ছবি তুলেছ। হঠাৎ বুঝতে পারি এই ফোনটা আমার অচেনা! এক অদ্ভুত শ্যাওলা সবুজ সেলফোন হাতে নিয়ে আমি তার কাজ-কর্ম বোঝার চেষ্টা করি। শুধাই তোমাকে, এই ফোন? তুমি কাচুমাচু, যেন সামনে দাঁড়িয়ে ছড়ি হাতে দিদিমণি, বললে, এর ফ্রেশিয়াটা বদলী করেছি! আহত দুচোখ আমার তোমার পরেই নিবদ্ধ। নীরব প্রশ্নের ঊত্তরে তুমি বলে ওঠো, ওই ফোনটা আমার পছন্দ ছিল না!
আমি শুনতে পাই, আমার ভাল লাগে না। আমার ভাল লাগে না। ওখানে আমার ভাল লাগে না। আমি পিছোতে থাকি। আমার পেছনে খোলা দরজা। পিছু হেঁটে আমি পেরিয়ে যাই বাগান। তোমার দরজায় স্থির দুই চোখ আমার। তুমি কী বেরিয়ে আসবে? আমাকে ডাকবে কী তুমি? আমি মুখ ঘুরিয়ে দৌড়ে পেরিয়ে যাই পাহাড়ী রাস্তা, দ্রুত নেমে যাই ঢাল বেয়ে। হুমড়ি খেয়ে পড়ি আবার উঠে দৌড়াই। ওই তো সামনে দানিয়ুব। ওপারে আলোকিত শহর, এপারে পাহাড়চুড়ার বাংলোয় তুমি আর শুভ্র-স্বচ্ছ রাত্রিবাসে তিন নারী..
০৯-০৩-০৭
4 comments:
আপনার দুটো লেখাই পড়লাম। মনে হল আপনি 'অচেনা' শব্দটিকে ভালবাসেন। অচেনা মানুষ, অচেনা সেলফোন্। নিজেকেও কি অচেনা রাখতে চান? লেখাটা বুঝতে পারিনি, তবে পড়তে ভাল লেগেছে।
লেখার ধরণটা আলাদা... নদীর মত। নানা মন্দভালর ওপর দিয়ে যেন বয়ে চলেছে, তুমি পাড়ে বসে বহতা সেই গতিটাকে শুধু দেখছ, ভালবাসছ... লিখে ফেলছো। তাই কি?
চন্দন,
ভালবাসি কি না জানি না, তবে মাঝে মাঝেই সবকিছুকে ভীষনণ অচেনা লাগতে শুরু করে। নিজেকে অচেনা? নিজেকেই বোধ হয় চিনি সবচাইতে কম।
এই লেখাটা বেশ অনেককাল আগের, ২০০৭এর। মনের ভেতরে যে কত রকমের গোলযোগ চলে তার কী কোনো ঠিকানা আছে! সেই সব জটিলতা শব্দে রূপ নেয়, আকারে দেখা দেয়, ছোট্ট একফালি লেখা হয়, এটা সেরকমই এক লেখা। জাগরণ আর নিদ্রার মধ্যবর্তী সময়কালের খুচরো ছবি। স্বপ্ন নয় আবার সত্যি ও নয়। জটিল লাগছে কি?
পড়া এবং মত জানানোর জন্যে ধন্যবাদ।
মঞ্জু,
যেটুকু দেখতে পাই তার ছটাকখানিক ও যদি লিখতে পারতাম..
তোমার এই মনফসলে আমার বিবর্ণ কবিতার দু-চার পঙক্তি রাখার জন্যে ধন্যবাদ..
Post a Comment